এক শিশুকে কামড় দিয়েছিল কুকুর। আর এরই ‘বদলা’ নিতে ঘটল অমানবিক হত্যাকাণ্ড। গুলি করে খুন করা হলো একে একে ২৯টি কুকুরকে। এছাড়া হত্যাচেষ্টায় আহতও হয়েছে আরও বেশ কিছু সারমেয়। প্রাণীপ্রেমী এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গোটা বিষয়টি সামনে আনার পর নিন্দার ঝড় ওঠেছে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কাতারের রাজধানী দোহায়। দোহা নিউজের বরাত দিয়ে বুধবার (২০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহা শহরের একটি এলাকায় এক শিশুকে কুকুর কামড়ায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই শিশুর বাবা ও তার আত্মীয়স্বজনরার। এরপরই এলাকা থেকে কুকুর তাড়ানোর অভিযানে নামেন তারা।
দোহাভিত্তিক দাতব্য সংগঠন ‘পিএডব্লিউএস রেসকিউ কাতার’ জানিয়েছে, শিশুকে কুকুর কামড়ানোয় হামলাকারীরা স্থানীয় কারখানার কাছাকাছি এলাকাটিকে সারমেয়মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও ওই এলাকাবাসী পথকুকুরদের খাবার দিয়ে দেখভাল করতেন।
তবে এলাকাবাসীর ওই মনোভাব মানতে চায়নি হামলাকারীরা। স্থানীয় নিরাপত্তারক্ষীদের হুমকি দিয়ে সারমেয় হত্যার অভিযান চালায় তারা। গুলি করে হত্যা করা হয় একে একে ২৯টি কুকুরকে। হামলাকারীদের হাত থেকে কুকুরছানাও রক্ষা পায়নি। এছাড়া আহতও হয় বেশ কিছু সারমেয়।
কুকুরপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী ওই সংগঠনটির দাবি, দোহার ওই এলাকার কুকুরগুলো খুব শান্ত প্রকৃতির। স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সখ্যতাও ছিল। নিরাপত্তারক্ষীরা সেটি জানালেও হামলাকারীরা ক্ষান্ত হননি। এছাড়া হামলাকারীদের হাতে বন্দুক থাকায় নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটকাতে পারেননি।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে দোহার একটি প্রাণী অধিকার সংগঠন জানিয়েছে, বর্বর কাজ, কাতারের সাধারণ সমাজকে কলুষিত করা হলো। এছাড়া ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে কাতার সরকারের কাছে দাবিও জানানো হয়েছে।
এদিকে কুকুর হত্যার ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হতেই শোরগোল পড়ে যায়। সাধারণ মানুষের হাতে বন্দুক থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনলাইনে। অনেকে ঘটনার নিন্দা করে মৃত কুকুরদের প্রতি শোকপ্রকাশ করেছেন।
তাদের বক্তব্য, নিরীহ প্রাণীদের সঙ্গে যা হলো, তা মানা যায় না। মর্মান্তিক ঘটনা। আর এ কারণেই কাতারে বন্দুকের মালিকানা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের তথ্য অনুযায়ী, কাতারে বন্দুকের মালিক হতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। এছাড়া বন্দুকের মালিক হতে চাইলে বয়স ২১ বছরের বেশি হতে হবে এবং অপরাধমূলক কোনো রেকর্ড থাকা যাবে না।
অপরদিকে লাইসেন্সবিহীন আগ্নেয়াস্ত্র রাখলে কাতারে শাস্তির বিধানও রয়েছে। শাস্তির মধ্যে রয়েছে জরিমানা এবং/অথবা আগ্নেয়াস্ত্রের ধরনের ওপর নির্ভর করে এক বছর থেকে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড।