বাংলাদেশের রিজার্ভ ও মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি নিয়ে সব “শঙ্কা” উড়িয়ে দিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেছেন, “এক যুগ আগের চেয়ে এ দুই ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এখন ভালো। এখনো দেশে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫.৯%। আর রিজার্ভ নেই নেই বলা হলেও এখনো এর পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার।”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে জুনে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৭.৫৬%, যা নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “মূল্যস্ফীতিকে আপনারা ভিন্নভাবে দাঁড় করার চেষ্টা করেন। আমরা মূল্যস্ফীতি মাসের ভিত্তিতে (মানথ টু মানথ) হিসাব করি। মূল্যস্ফীতি হবে এক বছরের গড় মূল্যস্ফীতি।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখন এক মাসের ৭.৫৬% কে নিয়ে আমরা আতঙ্কিত হয়ে গেছি। অথচ ২০০৯ সালে যখন দায়িত্বভার গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৩%। সেখান থেকে শুরু করে এখন যে গড় মূল্যস্ফীতি সেটা মাসের ভিত্তিতে ধরলে এক রকম তথ্য পাবেন। আর গড় মূল্যস্ফীতি পেলে আরেক রকম তথ্য পাওয়া যাবে। এখন আমাদের গড় মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ৫.৯%।
কোরবানি ঈদের ছুটির আগে আমদানি দায় পরিশোধের কারণে দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মত ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে ৩৯.৭৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। ফলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। এই উদ্বেগকে “অমূলক” মনে করেন অর্থমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ৬ জুলাই রিজার্ভ ছিল ৪১.৯৮ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগে ২০২১ সালের ৬ জুলাই এর পরিমাণ ছিল ৪৬.৫৪ বিলিয়ন ডলার। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। ২০২১ সালের আগস্টে তা রেকর্ড ৪৮.০৬ ডলারে পৌঁছায়।
রিজার্ভ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা যখন আরম্ভ করি আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৭ বিলিয়ন ডলার। এখন নাই নাই করেও আমাদের ৪০ বিলিয়ন ডলার আছে। ৪০ বিলিয়ন কিন্তু আগে কখনো আমাদের ছিল না। আমাদের সরকারের তিন মাসের মাথায় ৭.৯ বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়নে আসলো। ১০ থেকে আমরা ৪৮ বিলিয়নে গেলাম। সেখান থেকে এখন ৪০ বিলিয়নে আছি।
দেশের জনগণ সাংবাদিকদের কাছ থেকে সঠিক তথ্যের আশায় বসে থাকে মন্তব্য করে রিজার্ভ ও মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে এসব তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন দেশে কী হচ্ছে, সে সম্পর্কে আমরা খোঁজ-খবর রাখছি এবং তার সঙ্গে একোমোডেট করার চেষ্টা করছি।