জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলকে দলের উপজেলা কমিটির ত্রী বার্ষিক সম্মেলন থেকে দূরে রাখার দাবী জানিয়েছে বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ।
এছাড়া নৌকা প্রতিকের বিরোধীতাকারীদের কমিটিতে পদ-পদবি না দেওয়াসহ ৮ দফা বাস্তবায়ন করে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দিন পুনর্বিবেচনার দাবিও জানানো হয়েছে। অন্যথায় ঘোষিত ২৬ জুলাই সংগঠনের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার ঘোষনা দেন দলের নেতা কর্মীরা।
সোমবার উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবি জানানো হয়েছে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে নিজের ছোট ভাইকে বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী করে বিজয়ী করান।
এর পর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে তিনি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বিদ্রোহীদের বিজয়ী করেছেন। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিস্কার ঘোষনা রয়েছে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা বা তাদের যারা আশ্রয় প্রশয় দিবে তারা আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের পদে থাকতে পারবে না।
তাই তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামী ২৬ জুলাইয়ের কাউন্সিল থেকে সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দূরে রাখার দাবী জানান। একই দাবী জানিয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।
আবেদনে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন করা বা তাদের আশ্রয় প্রশয় দাতাদের কোন দায়িত্ব না দেয়া এবং গোপন ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করার দাবী জানানো হয়। অন্যথায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন নেতা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন না বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, এমপি বকুল ছাত্র জীবনে বিএনপির ছাত্রদলের পদে ছিলেন পরে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করে এখন দলকে খন্ড বিখন্ড করতে চাইছেন। তার পিতা মুসলিম লীগের রাজনীতি করতো এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম একজন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুকুমার মুখার্জী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা উপাধ্যক্ষ শাহিদা খাতুন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর বারী, সাধারণ সম্পাদক (ভার) ইমদাদুল হক নান্নু ,
ফাগুয়াড়দিয়ার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম, বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান,সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী সরকার ,জামনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি লোকমান হাকিম,
সাধারণ সম্পাদক মাজেদুর রহমান, পাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আসলাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, দয়ারামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক (ভার)চেয়ারম্যান মাহবুর রহমান মিঠু ,পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান,
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান নাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক শিহাব মাহামুদ সজল, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন সি.আই.সি, সাধারণ রফিকুল ইসলাম সহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা, কর্মী ও সমর্থকগণ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার রহমানের গ্রহণযোগ্যতা শুন্যের কোঠায় নেমেছে।
তাই দলের নেতাকর্মীরা তাদের নেতৃত্বে আশ্বস্ত না হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে। তিনি কাউকে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করাননি। তার বাবা মুসলিম লীগ এবং তিনি ছাত্রদল করতেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নিজেরা রাজাকারের সন্তান না হলে এসব নেতারা আমার বাবা ও আমার সর্ম্পকে এমন মিথ্যা কথা বলতে পারতেন না।’