কবি রেবা সরকার’র ছ’টি কবিতা

রেবা সরকার
রেবা সরকার
3 মিনিটে পড়ুন

ঘুমের বিভ্রাট

ঘুমের মাঝ বরাবর কেউ এসে ধাক্কালে
চরম বিপদ হয়

আবছা ঘুম সর্বদা মুহ্যমান
অভিসারী রাতে পূর্ণচাঁদ চুপচাপ

নিদ্রাহীনতায় চোখের কোলে কালো ছোপ
ক্রমশ বিকাশ ঘটায় সর্বসুখ

পুনরায় ঘুম আসে
অভিসারী রাত কাতরে দীর্ঘ সন্ধিক্ষণে
গোপন গোপনে…

- বিজ্ঞাপন -

ব্যয়ের পরিমাণ বোঝাতে পারি না

সংসারের বহু চাহিদা মেটাতে যতটুকু অর্থ
কখন যেন ফুড়ুৎ।
অবশেষে ধার বন্ধক।

কব্জিতে জোর আছে বলেই দুবেলা খেতে পাই।

অঙ্কে কাঁচা তা না হলে মাথায় ব্যামো হত
শরীর জুড়ে হাপিত্যেশ
অপেক্ষায় আমার ঘুমন্ত বিবেক।

রাস্তাকে গুটিয়ে নিয়ে কখন যেন শহুরে মানুষ হয়ে গেছি।

অপরিসীম বেদনা

বহুদিন ঘুম আটকে রেখেছিলাম
অনেক কাজ ছিল
বহুদিন রাত্রিকে দিন ভেবেছিলাম
কাজের মধ্যে অসুখ লেগেছিল

- বিজ্ঞাপন -

আর ঘুম আটকে রাখি না

রাত্রির বুকে আবোল তাবোল
পিশাচিনী রাত্রি মর্মে মর্মে বধূ হয়
রোদ বড় অকারণ

এসবের ঘনঘটা যেনতেন প্রকারেণ
অভাবের কোলে আসে দিবস যাপন

- বিজ্ঞাপন -

অথচ,
গরিমা গৌরবের উপভোগ

কখনো চিঠি লিখেছিলে?

আমি লিখেছিলাম–
নিয়মিত অপরিসীম বেদনায়

জীবন প্রেক্ষাপটে রোদ ও জল

জল অভিযানে সর্বস্ব খুইয়ে দাঁড়িয়েছি রোদ সমতলে
রোদ তীব্রতা ছড়িয়েছে এই তীরভূমি থেকে ওই তীরভূমিতে
অঞ্চলকে বিভক্ত করি তার মান্যতা পাই তা এক বিশেষ ভৌগলিক কারণ
এখানে আছে জলাশয় শস্যভান্ডার আর গাছ

এখানে এক প্রকার আচ্ছাদন আছে
রোদ সরে যায় এখান থেকে অন্যখানে
আমি দাঁড়িয়ে রোদ উৎসাহে জলপাতাল ভাঙ্গি
জীবন পরিবর্তনে সবকিছু ছাপিয়ে রোদ তীব্রতায়
মাটি এক আচ্ছাদন জীবনের অঞ্চল।

ওই যে আলোর বেগে

সকালে যদি মন খারাপ হয়
মন ভালো করে দেয় রোদ

কঠিন রোদে ঝলসে যায় মুখ
ক্রমে জ্বলে ওঠে অরণ্য

তারপর মেঘ জমে আকাশে
জল থই থই চারপাশ

আরো অনেক কিছুই…

আমি গাঁয়ের কথা ভাবি

আমাদের পাকা ধানক্ষেত পৌষের কুয়াশা সকাল
খেলা খেলা বিকেলের মাঠ

বিদ্যালয় সবুজ সবুজ
আমি দৌড় দৌড়…

এখনও তো রোদ– আমার ঘুমে রোদ
সকালে বিকেলে রোদ আর রোদ…

ডুয়ার্সের গাছ

শরীরে রোদ কি করে যে সহ্য হয়
তেমন কি কথা
সে রোদে পুড়ে পুড়ে হেঁটে যায়

যেখানে তোমার জন্য স্থাপিত ঘর
দোতলায় উঠতে উঠতে সি সি ক্যামেরায় দেখে নিচ্ছ সব
এখানে দেখতে হয় ভবিষ্যৎ
গাছকে সঙ্গী রেখে।

আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, লেবু, নারিকেল
কতকিছু ফলের সমারোহে
আসে পাখি গাছের ডালে ডালে
পাখিদের দেখতে দেখতে বুড়ো হবে তুমি।

বিকেল পেরোলেই গামছা পরে নিয়ে
গাছে গাছে জল দাও
একটা পূর্বজন্ম দিতে পারো
আমিও জল দেব গাছে
ফুল ফুটবে ফল ধরবে
মুখে হাসি ফুটে উঠবে।

এসব বিকেল আজ আমার নেই
তবুও ভালো লাগে ভাবতে
তুমি বিশেষ মালি কি না!
ফুল চেনাবে ফল চেনাবে

আমার ফুল পছন্দের ফল খুব পছন্দের।

জঙ্গল দেখাতে নিয়ে গেলে যেদিন
সেদিনও রোদ ছিল
ঘোমটা পড়া ডুয়ার্সের বউ সেজেছি
এতটা বোঝার বয়স ছিলনা যদিও

কোথায় চলেছি …
কোন পাহাড়িয়া পথে…
দূরে ওই সেগুনের গাছ …
ঝরে পড়া পাতা টুপটাপ…
নিঃশ্বাসে তুলে নিতে হয়…
রোদ স্নিগ্ধ দুপুরের ঘাম।

কবিতা এমনি এক বিষাদ
রোদমাখা ঘামঝরা দুঃস্বপ্নের।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
অনুসরণ করুন:
রেবা সরকারের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার পুঁটিমারী গ্রামে। পিতার নাম ডাঃ নরেন্দ্র নাথ সরকার। মাতার নাম সারদা সরকার। গ্রামের স্কুল এবং আলিপুরদুয়ার কলেজে শিক্ষা লাভ। চারটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সংকলন পাঁচটি। প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'নীল ছায়ানট' (২০১৪) দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'ঘুণপোকা'(২০১৫)। তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ 'স্বভূমে আমি একা'(২০১৮)। চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ 'পরমান্ন সুখ'(২০২০)। অজস্র পত্র পত্রিকায় কবিতা প্রকাশিত হয়েছে দেশে ও বিদেশে। সম্মানিত বিভিন্ন পুরস্কারে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!