বন্যায় ঘর হারিয়ে এতিম দুই ভাই-বোন গাছের ডালে বাস করেছে। ১৭ দিন মাচা বেঁধে থাকার পর এখন তারা এক প্রতিবেশির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ঘটনাটি সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের ঢালাগাঁও গ্রামের।
বোন জুলেখার বয়স (২২) ও ছোট ভাই রাকিবের বয়স (১৩)।
নিঃস্ব এই ভাই-বোন প্রধানমন্ত্রীর ১০ হাজার টাকা সহায়তা পেয়েছে। এতে তারা খুশি হলেও এ টাকা দিয়ে একটি ঘর নির্মাণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা। এলাকাবাসী এতিম এ দুই ভাই-বোনের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা যায়, শিমুলবাক ইউনিয়নের ঢালাগাঁও গ্রামে একটি মাচা বেঁধে বাস করত জুলেখা ও রাকিব। তাদের বাবা জবান আলী ও মা অনেক আগেই মারা গেছেন। এতিম দুই ছেলেমেয়ে সাহায্য সহায়তা নিয়ে দিনাযাপন করে আসছে। সাম্প্রতিক বন্যা ঘরের সব মালামালসহ তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে তারা বড় একটি গাছের ডালে আশ্রয় নেয়। এখানেই ১৭ দিন কাটে তাদের।
জুলেখার ভাষ্য, হঠাৎ করে বন্যার পানি ঘরে ঢোকে। আমরা দুই ভাই-বোন ভয়ে কাঁপতে থাকি। ১৭ তারিখ সকাল বেলা দেখি চোখের সামনেই বানের তোড়ে ঘরটি ভেসে যাচ্ছে। চারদিকে নৌকাও নেই। আশ্রয়ের কোনো জায়গাও নেই। সবার ঘরে পানি। দিশেহারা হয়ে ভেসে যাওয়া বাঁশ, টিন, কাঠ ও ঘরের আসবাবপত্র কোনোমতে ধরে পাশের একটি গাছের ডালে তুলি। সেই থেকে এখানেই দুই ভাইবোন মিলে মাচা বাঁধি। এভাবেই ১৭ দিন খেয়ে না খেয়ে থাকার পর একটি বাড়িতে আশ্রয় পাই।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘর নির্মাণের জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কয়েকদিন পরে ঘর নির্মাণে হাত দেবো।
শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘‘অসহায় এ পরিবারকে চাল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু খাবার দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর ১০ হাজার টাকা হাতে পৌঁছে দিয়েছি এবং অন্য একটি বাড়িতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। আমি নিজ উদ্যোগে এতিম ছেলেমেয়ে দুটির থাকার জন্য মাটি ভরাট করে একটি ঘর তৈরি করে দেব।’’