গোপনে দেশ ছাড়তে গিয়ে বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের বাধার মুখে পড়েছেন অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে (৭৩)। বিমানে ব্যর্থ হয়ে তিনি নৌবাহিনীর জাহাজে শ্রীলঙ্কা ছাড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
শনিবার (৯ জুলাই) থেকে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কা। গোতাবায়ার সরকারি বাসভবনেও ঢুকে পড়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরে সেনাবাহিনী তাকে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেয়। সেই স্থান থেকে গোতাবায়া জানিয়েছেন, ১৩ জুলাই তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।
বিমানবন্দরে আটকে যাওয়ার বিষয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া মঙ্গলবার বিমানবন্দরে গিয়ে ভিআইপি স্যুইটে অপেক্ষা করেন। নিরাপত্তার জন্যই প্রেসিডেন্টকে সেখানে রাখা হয়। এরপর তার পাসপোর্ট সিল মারার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের ভিআইপি স্যুইটে যেতে বলা হয়। তাঁরা অস্বীকার করেন পাসপোর্ট সিল মারতে। সোমবার স্ত্রীসহ বিমানবন্দরের পাশে একটি সামরিক ঘাঁটিতে রাত্রিযাপন করেন গোতাবায়া।
এর আগে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের ছোট ভাই এবং শ্রীলঙ্কার সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসেও মঙ্গলবার ভোরে দুবাইয়ের ফ্লাইট মিস করেছেন। যাত্রীদের আপত্তি আর অভিবাসন কর্মকর্তাদের একই রকম বাধার কারণে বাসিলও দেশ ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কয়েকজন যাত্রী তাদের ফ্লাইটে বাসিলকে ওঠানোর প্রতিবাদ জানায়। সেসময় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হলে বাসিল দ্রুত বিমানবন্দর ছেড়ে চলে যান।
শ্রীলঙ্কার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড এমিগ্রেশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএএস কানুগালা বলেন, শ্রীলঙ্কায় চলমান অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের দেশ ছেড়ে যেতে না দেওয়ার জন্য প্রচণ্ড চাপের মুখে আছেন কর্মকর্তারা। আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই এই সংকটের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ভিআইপি লাউঞ্জে কর্মরত অভিবাসন কর্মকর্তারা তাদের সেবা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রাজাপাকসে পরিবার শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে বছরের পর বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। দেশটির অর্থনৈতিক সংকটের কারণ হিসেবে অধিকাংশ নাগরিক এই পরিবারকে দায়ি মনে করেন।