জাপানের সাবেক জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববাসী অবাক।জাপানের মতো শান্তিপ্রিয় দেশে এমন নৃশংসা চিন্তারও বাইরে। এ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে বিবেকবান মানুষকে।
শুক্রবার সকালে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় নারা শহরে নির্বাচনি পথসভায় বক্তৃতা করার সময় পেছন থেকে গুলি করা হয় শিনজো আবেকে।এর কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিনজো আবে যে স্থানে বক্তৃতা করছিলেন, সেটি রাজধানী টোকিও থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দূরে। তিনি নারার পুননির্বাচনে জাপান পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষের বর্তমান সদস্য কেই সাতোর পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
বক্তৃতা দেওয়ার সময় পেছন থেকে কাপুরুষোচিত হামলার পর পড়ে যান শিনজো আবে। তখন হঠাৎ দুটি গুলির আওয়াজে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। একটি গুলি আবের ঘাড়ে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে আবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। তাকে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে কাছেই হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে নিরাপত্তাকর্মীরা বন্দুকধারীকে ধরে ফেলেন, যাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। সেখানে মাটিতে পড়ে থাকা একটি বন্দুকও উদ্ধার করেছে তারা। বন্দুকটি হাতে তৈরি বলে মনে করা হলেও পুলিশ এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি।
জাপানের সংবাদমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, বক্তৃতার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আবেকে পেছন থেকে গুলি করা হয়, তিনি পড়ে যান আর রক্তপাত হতে থাকে। সেখানে থেকে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
নারা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান,সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঘাড়ের ডান দিকে গুলি লেগেছিল আর তার আঘাত হৃদপিণ্ড পর্যন্ত গভীর ছিল। তবে শরীরে আর কোনো বুলেট পাওয়া যায়নি।
গুলি লাগার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই দেশটির প্রভাবশালী এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আবে জাপানের দুবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।তিনি সবচেয়ে বেশি সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।আধুনিক জাপানের রূপকার বলা হয়ে থাকে তাকে।
শিনজো আবেকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তেতসুইয়া ইয়ামাগামি (৪১) নারা শহরেরই বাসিন্দা। তিনি জাপানের নৌ বাহিনীর মেরিটাইম সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের সাবেক সদস্য।
তেতসুইয়া জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বলেছেন, আবের প্রতি তার অসন্তোষ ছিল, সে কারণেই তাকে ‘হত্যা’ করতে চেয়েছিলেন।
জনপ্রিয় এই নেতার মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না দেশটির জনতা।সর্বস্তরে শোকের ছায়া বইছে।