প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে পঞ্চগড়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার পর রাতে তাদের আটক করা হয়।
পরে তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বাসিন্দা ও গণউন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক বেলাল উদ্দীন (৩৮), প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বড়দাপ এলাকার মোকসেদুর রহমান (২৮) ও একই উপজেলার ছোটদাপ এলাকার আহসান হাবিব (২৮)।
পুলিশ ও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর মধ্যে পরীক্ষার্থী মকসেদুর রহমান ও আহসান হাবিবের লিখিত পরীক্ষার খাতার হাতের লেখার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষার লেখার অমিল পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের পরীক্ষা আরেকজন দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। প্রায় ১৮ লাখ টাকার বিনিময়ে “প্রক্সি” পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল বলেও জানান তারা।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে তারা থানা হাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার করা হয়েছে। বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সময় তাদের হাতের লেখা দেখে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয়। পরে কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্য কাউকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং এ জন্য তারা মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন বলেও স্বীকার করেন। এ জন্য তাদের আটক করে রাখা হয়। সবার পরীক্ষা শেষে কৌশলে নিয়োগ পরীক্ষায় এমন জালিয়াতির মূলহোতা বেলাল উদ্দীনকে ডেকে এনে তিন জনকেই পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, আসামি বেলাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে ঋণ প্রদানের শর্ত হিসেবে ব্ল্যাঙ্ক চেক নেন। ঋণ পরিশোধের পরও ঋণের টাকা উত্তোলনে বন্ধক রাখা চেক দিয়ে অসংখ্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলাসহ মিথ্যা ও ভুয়া মামলা করার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ ও বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।