সাম্প্রতিক এক বৈশ্বিক জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিষণ্ণতা এবং মানসিক চাপে ভোগা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। গ্যালাপের প্রকাশিত “২০২২ গ্লোবাল ইমোশন রিপোর্ট” শীর্ষক প্রতিবেদনে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। জরিপে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪৫।
তালিকায় সবার ওপরে ছিল আফগানিস্তান। সূচকে ৫৯ স্কোর নিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি এক নম্বর স্থান দখল করে আছে। দেশটি মানসিক চাপে ভোগার দিক থেকেও ৩২ স্কোর নিয়ে সবার ওপরে।
প্রতিবেদনে বিষণ্ণতা এবং মানসিক চাপে ভোগার পেছনে পাঁচটি কারণের কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- দারিদ্র্য, খারাপ সম্প্রদায়, ক্ষুধা, একাকীত্ব এবং ভালো কাজের অভাব।
প্রতি বছর বিশ্ববাসীর মঙ্গল কামনা করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ওপর জরিপ পরিচালিত হয়। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে চলা এ জরিপে ১০০০ মানুষ অংশ নেন।
সব মিলিয়ে বিশ্বের ১২২টি দেশের ১ লাখ ২৭ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শারীরিক ব্যথা, উদ্বেগ, দুঃখ, মানসিক চাপ এবং রাগ অনুভব বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়।
জরিপের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীরা ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে তুলনামুলকভাবে বেশি মানসিক চাপে ভুগেছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৪২% ব্যক্তিই অনেক বেশি মানসিক উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন, যা আগের বছরের চেয়ে ২% বেশি।
জরিপের অংশ নেওয়া ৩১% ব্যক্তিই শারীরিক ব্যথা, ২৮% ব্যক্তি অসুখী এবং ২৩% ব্যক্তি রাগ সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন।
নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সূচকের দিক থেকে সবার ওপরে ছিল পানামা। জরিপে দেশটির স্কোর ৮৫। পানামা ছাড়া প্যারাগুয়ে, এল সালভাদর, হন্ডুরাস এবং নিকারাগুয়ার স্কোরও ছিল ৮০ এর ঘরে। লাতিন আমেরিকার বাইরে ২০২১ সালের এ তালিকায় জায়গা পাওয়া দেশগুলো হলো- আইসল্যান্ড, ফিলিপাইন, সেনেগাল, ডেনমার্ক এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিশ্ববাসীদের বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভোগার কারণ হিসেবে জরিপটি পরিচালনা করা গ্যালাপের গ্লোবাল ম্যানেজিং পার্টনার জন ক্লিফটন জানান, পুরো পৃথিবী যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি এবং করোনাভাইরাস মহামারিতে ভুগছে। এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি নিয়ামক পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে।
তিনি আরও জানান, এগুলোর উত্থানের আগেই বিশ্ববাসীদের মধ্যে মানসিক অসুখে ভোগার বিষয়টি শুরু হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, এক দশক ধরে এ সমস্যার বিস্তৃতি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর নাগরিকদের মধ্যে প্রচুর ইতিবাচক আবেগের প্রতিফলন থাকায় তারা মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা না ভোগা দেশের তালিকায় ওপরের দিকে জায়গা পেয়েছে।