পাত্রী দেখে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বুড়াইচ ইউনিয়নের এক সংরক্ষিত নারী সদস্য (মেম্বার) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৩ জুলাই) জেলার বোয়ালমারী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। পরদিন রবিবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগী নারী (৩৫) বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী-বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা সার্কেল) সুমন কর।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের ফলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও নারী মেম্বার শনিবার বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের অমৃতনগর গ্রামে এক আত্মীয়ের জন্য পাত্রী দেখতে যান। পাত্রী দেখা শেষে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে অমৃতনগর বটতলা নামক জায়গায় এসে তিনি পথ হারিয়ে ফেলেন।
তখন ওই জায়গায় বসে থাকা কয়েকজন যুবককে তিনি বুড়াইচ যাওয়ার পথ দেখিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে এ সুযোগে যুবকরা ওই নারী মেম্বারকে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। পরে অসুস্থ অবস্থায় ওই নারী মেম্বার কোনোরকমে ওই জায়গা থেকে রাস্তায় এলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে রবিবার সকালে ওই নারী মেম্বার বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। এরপর দুপুরের দিকে প্রধান অভিযুক্ত মাহাবুব আলম (৩০) নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। সে বোয়ালমারী পৌর এলাকার রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় মাইক্রোবাসের ড্রাইভার।
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে একটি মহল উঠেপড়ে লাগে। এ কারণে ঘটনাটি দেরিতে সবার সামনে আসে। এক পর্যায়ে রবিবার রাতে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, “ওই নারী মেম্বার বিষয়টি জানানোর পরপরই ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল হোতা মাহাবুব আলমকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া, ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের আটক করতেও অভিযান চালানো হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “দুপুরে ওই নারী মেম্বারকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা সঠিক নয়।”
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর বলেন, “এ ঘটনায় বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি খুব দ্রুত আমরা সব আসামিদের আইনের আওতায় আনতে সমর্থ হবো।”