পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় দেশটির কমপক্ষে ৩০ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। দেশটির নাইজার প্রদেশের শিরোরো এলাকায় একটি খনিতে বন্দুকধারীদের হামলায় তারা প্রাণ হারান। তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার নাইজেরিয়ার নাইজার প্রদেশের শিরোরো এলাকার ওই খনিতে হামলার পর অপহরণের শিকার শ্রমিকদের খোঁজে সেখানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। নিখোঁজদের মধ্যে চারজন চীনা নাগরিকও ছিলেন। পরে সেখানেই সেনাসদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় নাইজারের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কমিশনার ইমানুয়েল উমর হামলার পর প্রাথমিকভাবে বলেন, আজতা আবোকি গ্রামের ওই খনিতে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত সংখ্যক লোক নিহত হয়েছেন।
শনিবার নাইজার প্রদেশের রাজধানী শিরোরো এবং মিন্নাতের দু’টি সেনা সূত্র জানিয়েছে, পরে নিরাপত্তা বাহিনী আক্রমণের জবাবে সেখানে গেলে, বন্দুকধারীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এছাড়া অ্যামবুশ হামলায় তিনটি ট্রাকে থাকা ৩০ জন সৈন্যকে হত্যা করে তারা।
শিরোরোর সেনা ঘাঁটির এক সৈনিক বলেছেন, ‘আমাদের সেনাদের হারানো হৃদয়বিদারক, তারা শক্তিবৃদ্ধির জন্য সেখানে গিয়েছিল। এটি আমাদের ব্যথিত করলেও আমরা হাল ছাড়ব না।’
উল্লেখ্য, পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডাকাতি, হত্যা, লুটপাট, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বন্দি ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ বন্ধে নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদেক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস (ইসলামিক স্টেট) পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে নাইজেরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।