সুদানে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) আফ্রিকার এই দেশটিতে সেনাশাসন বিরোধী বিক্ষোভে গুলিবর্ষণের পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আট মাস আগে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সমাবেশ করতে বৃহস্পতিবার সুদানের রাস্তায় নেমে আসে হাজারও মানুষ। এসময় সেনাবাহিনীকে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ারও দাবি জানান তারা। অবশ্য এই বিক্ষোভ রুখতে কঠোর নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেওয়াসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারী একত্রিত হয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদেরকে বাধা দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে নিরাপত্তা কর্মীরা।
সংবাদমাধ্যম বলছে, নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলেও কাজ হয়নি। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের প্যালেসের দিকে এগোতে থাকেন। তখন নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়। তাতেই অন্তত আটজন বিক্ষোভকারী মারা যান।
সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বলছে, সেনা-অভ্যুত্থানের তৃতীয় বর্যপূর্তি উপলক্ষে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল। স্বৈরাচারী নেতা ওমর আল-বাশিরের বিরুদ্ধে ছিল এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভের ডাক দেওয়ার পরই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীরা যেন তাদের সংখ্য়াবৃদ্ধি না করতে পারে, তার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও খার্তুম ও তার পাশের দুই শহরে লাখখানেক বিক্ষোভকারী জমায়েত হন। সুদানের দু’টি বেসরকারি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকে নেট বন্ধের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া সকাল থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানী ও তার পাশের দুই শহরের সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী ব্রিজ বন্ধ করে দেয়। এরপরও প্রচুর মানুষ সেখানে জড়ো হন। তাদের ওপর নির্বিচারে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি চলতি সপ্তাহেই সুদানের সেনাবাহিনীকে সংযত থাকার আবেদন জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।