সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম জিতুকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় জিতুকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম।
সাইফুল ইসলাম বলেন, “রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও কলেজ শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য উৎপল কুমার সরকার হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামি জিতুকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনার পরই আমরা তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করি।”
তিনি আরও বলেন, “জিতুর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। সাভারের অধিকাংশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ আমাদের এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।”
গত ২৫ জুন আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের শিক্ষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উৎপল কুমার সরকারকে (৩৭) স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিতুর বিরুদ্ধে নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
মামলায় অভিযুক্ত জিতুর বয়স ১৬ বছর দেখানো হলেও জন্ম সনদ ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী তার বয়স ১৯ বছর ৬ মাস। পরিবারের দুই ব্যক্তি স্কুল পরিচালনা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার কারণে জিতু বিভিন্ন সময়ে স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতো। এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপও নিয়ন্ত্রণ করতো সে। নানা সভাপতি ও মামা পরিচালক হওয়ায় স্কুলে অভিযুক্ত ওই ছাত্র শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব খাটাতো। এছাড়া, স্কুলের ছাত্রীদেরও উত্ত্যক্ত করতো।
বুধবার ভোরে অভিযুক্ত ছাত্রের বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ছেলেকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে দেন।
পরবর্তীতে ওইদিন সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রাম থেকে জিতুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।