‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (২০ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে এবং জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল নামে একটি আলাদা তহবিল থাকবে। জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে এ পেনশনের আওতায় ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশগ্রহণ করবেন। পাশাপাশি বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এখানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তারা যদি নিজেদের নাম রেজিস্ট্রেশন করেন এবং প্রিমিয়াম দেন, তাহলে তারাও এটাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের অধিক বয়সীদের পৃথক একটা বিধি অনুযায়ী পেনশন স্কিমে আনা যাবে। তবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা দেওয়ার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলের অর্থ মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে।
বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৮ বছর থেকে শুরু হবে ৬০ বছরে কাটডাউন হয়ে যাবে, তারপর ৬০ বছর থেকে সে যতদিন জীবিত থাকবে, পেনশন পেতে থাকবে।
প্রিমিয়াম বা জমার টাকার পরিমাণ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এগুলো সব বিধির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। আজকে ধরুন দুই হাজার টাকা করে। তো ২০ বছর পরেতো এই দুই হাজার টাকার ভ্যালু এক থাকবে না। সেজন্য প্রিমিয়ামটা বিধি দিয়ে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
প্রিমিয়ামের একাধিক স্কেল থাকবে বলেও জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, পেনশনাররা আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ পেনশন পাবেন। ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত যারা দেবেন, মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পাবেন। আর যদি পেনশনে থাকাকালীন, ধরুন পেনশন নিচ্ছেন এমন কেউ ৬২ বছর বয়সে মারা গেলেন, তখন তার ওয়ারিশ যারা থাকবেন (নমিনি), তারা উনার ৭৫ বছর হওয়ার যে কয় দিন বাকি থাকবে তত দিন পর্যন্ত এ সুবিধা পাবেন। এটাকে বিশেষ বেনিফিট হিসেবে রাখা হয়েছে।
কেউ ধরুন ১৮ বছর বয়সে পেনশন স্কিমে টাকা জমা দেওয়া শুরু করল এবং ২৬ বছর বয়সে মারা গেল। তাহলে সে ৮ বছর টাকা দিল। তখন তার যে নমিনি থাকবে, তাকে অরিজিনাল কন্ট্রিবিউশন প্লাস প্রফিট, দুটোই দিয়ে দেওয়া হবে। সে পেনশন পাবে না, তাকে এককালীন দিয়ে দেওয়া হবে। এ স্কিমে সরকারি চাকরিজীবীরা থাকবেন না। কারণ তারা তো রেগুলার পেনশনেই আছেন।