বিদ্যমান ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫’-এ তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার পুরোপুরি নিষিদ্ধ হলেও বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী বন্ধে সুনির্দিষ্ট কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। আর এ সুযোগে তামাক কোম্পানীগুলো বিক্রয়কেন্দ্রে দ্রব্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রকারন্তরে দ্রব্যের প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। আর এজন্য বর্তমান আইনের সংশোধন চান বাংলাদেশ গ্রোসারী বিজনেস এসোসিয়েশন (বিজিবিএ) এর নেতৃবৃন্দ। আজ ১৯ জুন রোববার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ গ্রোসারি বিজনেস এসোসিয়েশনের সাথে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের এক যৌথ মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।
বাংলাদেশ গ্রোসারী বিজনেস এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলমগীর হোসেন খান, পরিচালক মো. মাকসুদ আলম, মো. সাইফুল ইসলাম, পরামর্শক সনত বিশ^াস, ক্যাম্পেইন ফর টোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমান, তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মোঃ শরিফুল ইসলাম, মিডিয়া ম্যানেজার রেজাউর রহমান রিজভী, প্রকল্প কর্মকর্তা অদুত রহমান ইমন, শারমিন আক্তার রিনি সহ বাংলাদেশ গ্রোসারী বিজনেস এসোসিয়েশনের কার্যকরী ও সাধারণ সদস্যগণ।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মোঃ শরিফুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধে তামাক কোম্পানী তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শনের মাধ্যমে কিভাবে তামাকের প্রতি তরুণদেরকে আকৃষ্ট করছে তা তুলে ধরা হয়।
মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্যে মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক বাড়ায়। বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন করলে শিশু ও যুবকরা আকৃষ্ট হয়। তাই বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন ও সিঙ্গেল স্টিক সিগারেট বা বিড়ির বিক্রি বন্ধ করা গেলে তামাকের ব্যবহার অনেকাংশেই কমে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আর এজন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করারও জোর দাবি জানাচ্ছি।
মোঃ আলমগীর হোসেন খান বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক বাড়ায়। বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন করলে শিশু ও যুবকরা আকৃষ্ট হয়। আমি বিশ্বাস করি, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন বন্ধ হলে তামাক বিক্রয় ও ব্যবহার অনেকাংশেই কমে যাবে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন আইন সংশোধন করে বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করুন।
আবদুস সালাম মিয়া বলেন, বিদ্যমান আইনে বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী বন্ধে সুনির্দিষ্ট কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে তামাকের বিস্তার ঘটছে। একারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ কেবল তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার জনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। অথচ এটি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ততটা নই যতটা হওয়া উচিত ছিল।
সভাপতির বক্তব্যে মো. আবুল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত করার ভিশনের সঙ্গে আমরা বাংলাদেশ গ্রোসারী বিজনেস এসোসিয়েশন একমত পোষণ করছি। এছাড়া আগামী প্রজন্মকে রক্ষার্থে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনের বিরুদ্ধে আইন করা উচিত বলে আমরা মনে করছি। উপরন্তু সেই আইনের সঠিক বাস্তবায়ন যাতে হয় সেজন্যও সকলের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে।