লোকশিল্প বিষয়ে দুদিনের কর্মশালা ও লোকশিল্পীদের নিয়ে সম্মেলন করে অভিনব নজির গড়লো কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যব্যাপী প্রায় দশটি জেলা থেকে চল্লিশজন লোকশিল্পীকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রান্তীয় স্তরের লোকশিল্পীরা তাঁদের শিল্পকাজ দেখিয়ে সকলকে মুগ্ধ করেছে।
লোকসংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা থেকে আগত ফুলব্রাইট ফেলো লোরা হ্যারিস গ্যাসকোন ও বাংলাদেশের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকসংস্কৃতিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং কৃতি শিল্পীদের মধ্যে পদ্মশ্রী প্রাপক তাঁতশিল্পী বীরেন বসাক, জাতীয় স্তরের পুরস্কার প্রাপক মৃৎশিল্পী সুবীর পাল, শঙ্খশিল্পী বাবলু নন্দী, শোলাশিল্পী আশীষ মালাকার, মুখোশ শিল্পী ধর্মেন্দ্র সূত্রধর সহ আরোও অনেকে।
আন্তর্জাতিক এই কর্মশালার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করে উপাচার্য অধ্যাপক মানস কুমার সান্যাল জানান, লোকসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে এটি একটি অভিনব প্রয়াস ছিল। আমরা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকশিল্পদ্রব্যের একটি স্থায়ী প্রর্দশনশালা গড়ে তুলতে চাই। লোকসংস্কৃতি বিভাগের এই বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি খুব খুশি। লোকসংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সুজয়কুমার মণ্ডল জানান, প্রান্তীয় স্তরের কৃতি লোকশিল্পীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে সংবর্ধনা প্রদান এবং লোকশিল্পীদের সঙ্গে গবেষকদের সরাসরি মত বিনিময়ের সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা অভিভূত। বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন নির্ধারক কমিটির অধিকর্তা অধ্যাপক নন্দকুমার ঘোষ, শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত কিংশুক চক্রবর্তী, ইতিহাস বিভাগের গবেষক ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন এদিন। প্রশাসনিক অধিকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিবন্ধক ড. দেবাংশু রায়, কলা ও বাণিজ্য অনুষদের ডীন অধ্যাপক অমলেন্দু ভূঁইয়া সহ আরো অনেকে।
সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পাল জানান, লোকশিল্পীদের নিয়ে অভিনব এই কর্মশালা গবেষণার মানোন্নয়নে সাহায্য করবে। লোকসংস্কৃতি বিভাগের এই সত্যিই প্রশংসনীয়।
আগত অতিথিবর্গ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক- অধ্যাপিকা ও গবেষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল চোখে দেখার মতো। লোকশিল্পীরা তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা অভিভূত। লোকশিল্পের প্রদর্শনী সহ লোকশিল্পদ্রব্য বিক্রয়ের ব্যবস্থাও ছিল। শিল্পীরা হাতেনাতে সরাসরি জিনিসপত্র তৈরি করেও দেখান। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে লোকশিল্পীদের সম্মেলন এই প্রথম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ড. দেবলিনা দেবনাথ। লোকসংস্কৃতি বিভাগের এই আয়োজনের সঙ্গে সহযোগিতায় ছিল আইকিউএসি, জনসংযোগ বিভাগ ও সংস্কৃতিবিদ্যা চর্চা কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই কর্মশালা ও প্রদর্শনীর বহুমাত্রিক ও বর্ণময় রূপ-বৈচিত্র শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী, গবেষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিপুল সাড়া ফেলেছে।