২০২১ সালে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। যা এক বছরের হিসাবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক-এসএনবি “ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২২” শিরোনামে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদন থেকে বাংলাদেশিদের জমানো অর্থের সর্বশেষ তথ্য পাওয়া গেছে।
এসএনবি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে সেখানকার ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশি ৯৫.৭০ টাকার সমান।
এসএনবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ।
২০১৭ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ, ২০১৮ সালের শেষে এই অর্থের পরিমাণ কমে হয় ৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ। ২০১৯ সালে এসে দাঁড়ায় ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্রাঁতে।
সুইজারল্যান্ডের এই তথ্য এমন সময় প্রকাশ করা হয়েছে, যখন সরকার বাজেটে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বৈধ-অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ গচ্ছিত রাখেন। দেশটির কঠোর গোপনীয় ব্যাংকিং নীতির কারণে সারা দুনিয়ার মানুষ সেখানে অর্থ জমা রাখেন।
সুইজারল্যান্ডের আইনে গ্রাহকদের গোপনীয়তা দৃঢ়ভাবে রক্ষার নিয়ম রয়েছে। এই আইনের ফলের দেশটির ব্যাংকগুলো কোনও পরিস্থিতিতেই গ্রাহকদের তথ্য কারও কাছে প্রকাশে বাধ্য নয়। ফলে কারা, কেন অথবা কীভাবে অর্থ ব্যাংকে রাখছেন, সে সম্পর্কে ব্যাংকগুলো কাউকে কোনও তথ্য দেয় না।
বাংলাদেশ থেকে নানাভাবে অবৈধ উপায়ে পাচার হওয়া অর্থ যেমন সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হয়, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও দেশটিতে অর্থ জমা রাখেন। ফলে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশিদের মোট অর্থের মধ্যে বৈধ-অবৈধ সবই রয়েছে। সাধারণত সুইস ব্যাংক অর্থের উৎস গোপন রাখে। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা রাখেন।