ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ১২টি পাতাল স্টেশন নিয়ে ১৯.৮৭ কিলোমিটার পাতাল মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে আগামী সেপ্টেম্বরে।
বুধবার (১৫ জুন) এমআরটি লাইন-১ এর লাইসেন্স হস্তান্তর শেষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানী লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সেমিনারে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিকের হাতে লাইসেন্স হস্তান্তর করেন।
সেমিনার শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এমএএন সিদ্দিক বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিমানবন্দর-বাড্ডা-কমলাপুর সড়কের নিচ দিয়ে মেট্রো লাইনটির মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকায় ছয়টি মেট্রো রেল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে এমআরটি লাইন-৬।
পাতাল অংশ ছাড়াও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত তৈরি করা হবে আরো ১১.৩৬ কিলোমিটার উড়াল মেট্রো। লাইনটি তৈরি করতে খরচ হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। ২০২৬ সালে কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।
এমএএন সিদ্দিক বলেন, পাতাল মেট্রো রেলের ডিপোর মূল নির্মাণকাজ শুরুর জন্য জাইকার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে। সেটা আগামী অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মধ্যে নাগাদ হতে পারে। তারপর প্রধানমন্ত্রী এই নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন।
এর আগে এমআরটি লাইন-১ এর লাইসেন্স হস্তান্তর এবং এমআরটি লাইন-৬ এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেট্রো লাইনগুলোর কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীতে যানজটের কারণে বছরে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। এমআরটি লাইন-৬ চালু হওয়ার পর মেট্রো রেল পরিচালনাকালে দৈনিক ভ্রমণ খরচ বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং যানবাহন পরিচালনা খরচ বাবদ প্রায় ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হবে।
এই সাশ্রয়কৃত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “যেকোনো উন্নয়ন অবকাঠামো করতে গেলে আমরা যারা অংশীজন আছি, তাদের সঙ্গে আগে মতবিনিময় করতে হবে। দরকার হলে পরিকল্পনা করার আগেই মতবিনিময় করতে হবে। তাহলে অনেক সমস্যারই সমাধান করতে পারতাম। এখন করা যাবে না বিষয়টি এমন নয়, তবে সংকট তৈরি হবে। যেকোনো সংস্থা যখন প্রকল্প নেবে তার আগেই যেন আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “একশো বছরের জন্য মেট্রো রেল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর সুফল পেতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ের বিকল্প নেই। মেট্রো রেল চালু হলে এর নিচের রাস্তা, ড্রেন, শাখা রোড, রাস্তার লাইট, পরিবেশ এগুলো সবই কিন্তু সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ফুটপাত যথেষ্ট প্রশস্ত হতে হবে। তা না হলে সেখানে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবে না।”