ঢাকায় যাদের জায়গা-জমি বা ফ্ল্যাট আছে, তারা সবাই কালো টাকার মালিক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ অবস্থার জন্য তিনি সরকার এবং সিস্টেমকেই দায়ী করেন।
বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি অর্থনৈতিক ও ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়ালি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “ঢাকায় যাদের জায়গা-জমি বা ফ্ল্যাট আছে তারা সবাই কালো টাকার মালিক। এজন্য সরকার দায়ী, আমাদের সিস্টেম দায়ী। গুলশান এলাকায় কেনা কোনো জমির যে দাম দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয় জমির প্রকৃত দাম তারচেয়েও বেশি। কিন্তু বেশি দামে তো রেজিস্ট্রি করতে পারবেন না। প্রত্যেকটা মৌজার জন্য দাম ঠিক করে দেওয়া আছে, এর বেশি দামে রেজিস্ট্রি করা যাবে না। সুতরাং যেটি পারা যাবে না, কালো টাকা তো সেখানেই হয়ে আছে। কে কালো টাকার বাইরে আছে?”
তিনি আরও বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে,যে ফ্ল্যাট দুই কোটি টাকায় রেজিস্ট্রি হচ্ছে সেই ফ্ল্যাটের প্রকৃত দাম ১০ কোটি টাকা। ফলে সরকার বাড়তি রেজিস্ট্রেশন ফি পাচ্ছে না। এখানেই কালো টাকার উত্থান হচ্ছে। এ বিষয়গুলো সবাইকে বুঝতে হবে। ঢাকা শহরে যার জায়গা আছে কিংবা যে ব্যক্তি জায়গা কিনেছেন তিনিই শুধু বলতে পারবেন, কত টাকায় রেজিস্ট্রি হয়েছে এবং জায়গার প্রকৃত বাজার দর কত।”
তিনি বলেন, “যখন কালো টাকা দেশে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি, তখন বলা হচ্ছে, কালো টাকা সাদা করাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আমি বারবার বলি অপ্রদর্শিত টাকা। এখানে লাজ-লজ্জার কিছু নেই, সরকার এজন্য দায়ী।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “পাচার করা টাকা যখন আসবে, আমরা মনে করি, তখন সেটার একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে। বিভিন্ন শিল্পকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ হবে। এই প্রত্যাশায় আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি।”
পাচার করা টাকা নিয়ে চাপে আছেন কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি কোনো চাপে নেই। আমি যেটি বলেছি, সেটি আমি করব। আমি অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে আসি না। আমি যখন রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা দিয়েছি, তখন অনেক সমালোচনা ছিল যে টাকা আসবে না, কিছু হবে না, টাকা পাচার হবে। কিন্তু এসেছে। শুধু আসেনি, রেকর্ড হয়েছে, যেটা কখনই সম্ভব ছিল না।”