উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পদ্মা সেতুজুড়ে এখন আলোর রোশনাই। উভয়প্রান্তের সবগুলো ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বলেছে প্রথমবারের মতো।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) সন্ধ্যা ৬টা ৫৪ মিনিটে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টে একসঙ্গে বাতি জ্বালানো হয়। সেতু খুলে দেওয়ার ১১ দিন আগে আলো যেন খুশির ঝিলিক এনে দিয়েছে স্থানীয়দের মুখে।
এদিন সেতুর ঝলমলে আলো দেখতে দুই প্রান্তেই লোকজন জড়ো হন। তবে ছিল নিরাপত্তার কড়াকড়ি। সে কারণে কাছে না যেতে পারলেও দূর থেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।
পদ্মা সেতুর বিদ্যুতের দায়িত্বে থাকা সেতু বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেনে জানায়, ৪ জুন বিকেলে পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়। ওই দিন সেতুর ১৪ থেকে ১৯ নম্বর পিলারের মাঝামাঝিতে ২৪টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হয়েছিল। এরপর ১১ জুন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে সেতুর সব কটি বাতি জ্বালানো হয়। তখন সেতুতে জেনারেটরের মাধ্যমে বাতি জ্বালানো হয়েছিল। গতকাল সোমবার মাওয়া প্রান্তে বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে ২০৭টি বাতি জ্বালানো হয়।
সেতু বিভাগ আরও জানায়, ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ভায়াডাক্টে প্রথম ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। ৬.১৫ কিলোমিটার সেতুতে মোট ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে মূল সেতুতে ৩২৮টি, জাজিরা প্রান্তের ভায়াডাক্টে ৪৬টি, মাওয়া প্রান্তের ভায়াডাক্টে ৪১টি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়। মূল সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শেষ হয় ১৮ এপ্রিল। ২৪ মে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর পিলারে সেতুর সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়। শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ৮০ কিলোওয়াট ও মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে দেওয়া আরও ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুতে সেতুর ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হলো।
পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা সেতুতে রাতের আঁধার ছাপিয়ে ঝলমলে আলো দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নৌপথে পারাপার হওয়া যাত্রীরা।
তাদের মধ্যে ফারদিন নামে একজন বলেন, ‘‘আমরা ঢাকায় কাজ করি। এক আত্মীয়ের বিয়েতে গ্রামে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরছিলাম। ফেরিতে উঠেই জানতে পারি, সেতুতে আলো জ্বালানো হবে। ফেরিতে চড়ে যেতে যেতে পুরো পদ্মা সেতুতে প্রথমবারের মতো জ্বলে ওঠা আলোকচ্ছটা দেখেছি। এটা আমাদের জীবনে স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।’’
২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। ২৬ জুন সকাল থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগব্যবস্থার নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।