প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটক সীমিত করা হলে স্থানীয় বাসিন্দা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ প্রায় তিন লাখ মানুষ জীবিকা হারাবে। হুমকির মুখে পড়বে পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারীদের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। তাই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনার দাবি জানিয়েছে কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
রোববার (১২ জুন) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক মানবন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের ভ্রমণ সীমিতকরণ বা রাত্রি যাপনে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হলে পর্যটন শিল্পে নিয়োজিত সাত-আটটি জাহাজ, ২০০-৩০০ বাস-মিনিবাস, ১০০ মাইক্রোবাস, ২০০ ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান, ৪০০ টুরিস্ট গাইড এবং দ্বীপের ১২০টি হোটেল-কটেজ ও ৭০টি রেস্তোরাঁয় কর্মরতদের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকার সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা তৈরি করেছেন।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিনে ৯০০ এর বেশি পর্যটক ভ্রমণে যেতে পারবে না। একইসঙ্গে যেসব পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাবেন, তাদের ১ হাজার টাকা করে ভ্যাট দিতে হবে। এসব সিদ্ধান্ত পর্যটনের জন্য আত্মঘাতী। এতে করে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ক্ষতি হবে। তাই এ নীতিমালা বাতিলের দাবি জানান তারা।
জাহাজ মালিক সমিতির (স্কোয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকার ২০০৯ সালে পর্যটনকে ‘শিল্প’ ঘোষণার পর থেকে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পর্যটন শিল্প বিকশিত হয়েছে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটন বিকশিত হওয়ার আগে স্থানীয় জনগোষ্ঠী সমুদ্র থেকে মাছ আহরণের পাশাপশি প্রবাল উত্তোলন, প্রবাল পাথরকে নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য উত্তোলন করে বিক্রি, মাছের অভয়ারণ্য ধ্বংস, শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ করে বিক্রি, কাছিমের আবাসস্থল নষ্ট করাসহ বিভিন্ন উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
কিন্তু সেন্ট মাটিনে পর্যটন শিল্প বিকশিত হওয়ার পর ওই জনগোষ্ঠী জীবিকা নির্বাহের বিকল্প পাওয়ায় তাদের জীবনধারায় আমূল পরিবর্তন আসে। তারা পরিবেশ রক্ষায় সোচ্ছার ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রীর স্ব-উদ্যোগে সর্বপ্রথম ২০১৬ ও ২০১৭ সালকে পর্যটনবর্ষ ঘোষণা করার ফলে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা উৎসাহিত হয়ে তাদের বাসা-বাড়ির এক-দুই রুম পরিবেশবান্ধব অতিথিশালা তৈরি করে পর্যটকসেবা দিয়ে যাচ্ছে। দ্বীপকে ভালোবেসে বাৎসরিক মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবসা করার ঝুঁকি নিয়ে উদ্যোক্তারা বিপুল বিনিয়োগ করেছেন।