ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হাতে আটক তিন বিদেশি যোদ্ধাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তদের দু’জন ব্রিটিশ এবং একজন মরক্কোর নাগরিক। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের স্বঘোষিত দোনেতস্ক প্রজাতন্ত্রের আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেতস্ক অঞ্চলে যুদ্ধের সময় রুশ সেনাদের হাতে আটক হয়েছিলেন তারা। রুশ মালিকানাধীন বার্তাসংস্থা আরআইএ নভোস্তি’র বরাত দিয়ে শুক্রবার (১০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তখ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ব্রিটেনের নটিংহামশায়ারের বাসিন্দা ২৮ বছরের এইডেন আসলিন, বেডফোর্ডশায়ারের বাসিন্দা ৪৮ বছর বয়স্ক শন পিনার এবং তৃতীয় আরেক ব্যক্তি মরক্কোর নাগরিক সাউদুন ব্রাহিমকে দোনেতস্ক গণ প্রজাতন্ত্রের একটি আদালতে হাজির করা হয়। এই কোর্ট পরিচালনা করে রুশ সমর্থক বিদ্রোহীরা।
এই আদালত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। এটি কার্যত রাশিয়ার অনুগত একটি আদালত। বিচারের সময় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভাড়াটে সৈন্য হিসাবে কাজ করার অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের, দোনেতস্কের সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা উৎখাতের এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর ব্যাপারে প্রশিক্ষণ নেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়।
তাদের আইনজীবীরা বলছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন। তবে দুই ব্রিটিশ ব্যক্তির পরিবার বলেছে তারা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে কাজ করতেন। বলা হচ্ছে, তারা দুজনেই ২০১৮ সাল থেকে ইউক্রেনে বসবাস করছেন।
তারা দুজনেই ইউক্রেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে বলা হচ্ছে এবং যুক্তরাজ্য স্পষ্ট জানিয়েছে যে তারা যুদ্ধবন্দী এবং সেই হিসাবে তাদের শাস্তি থেকে অব্যাহতি পাবার অধিকার আছে। ব্রিটেন বলছে, যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত হয়নি।
আরআইএ নিউজ টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছে, ‘দোনেতস্ক পিপলস রিপাবলিক-এর সুপ্রিম কোর্ট ভাড়াটে সৈনিক ব্রিটিশ এইডেন আসলিন, শন পিনার এবং মরক্কোর সাউদুন ব্রাহিম-এর বিচারে প্রথম সাজা প্রদান করে তাদের মুত্যুদণ্ড দিয়েছে। আদালত কক্ষ থেকে এই খবর জানিয়েছেন আরআইএ নভোস্তির সংবাদদাতা।’
ব্রিটিশ দুই বন্দীকে গতকাল রুশপন্থী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার আদালতে হাজির করা হয়। তাদের আটক রাখা হয়েছিল দোনেতস্ক পিপলস রিপাবলিকে। রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৪ সালে এই অঞ্চলকে স্বঘোষিত দোনেতস্ক পিপলস রিপাবলিক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে।