সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের সন্তানদের শিশু আইন মেনে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দীনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার (৮ জুন) এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়েছে, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কার্যালয়ে নয়, অভিভাবক দাদা ও সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
শিশু আইন অনুসরণ করে সমাজসেবা কর্মকর্তার সামনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর রাষ্ট্র ও আবেদনকারী উভয়ের শুনানি মঙ্গলবার (৭ জুন) সম্পন্ন হয়। পরে এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্যে বুধবার (৮ জুন) দিন ঠিক করেন উচ্চ আদালত। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
উল্লেখ্য মায়ের হত্যার বিষয়ে এসপি বাবুলের দুই সন্তানকে শিশু আইন মেনে পিবিআইকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশনা দিতে আবেদন করেন মুহাম্মদ শিশির মনির।
গত রোববার (৫ জুন) দুই শিশুর দাদা ও চাচার পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন শিশির মনির।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাবুলের দুই শিশু সন্তানকে ১৫ দিনের মধ্যে পিবিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। তবে পিবিআই কার্যালয়ে কথা বলার আদেশ বাতিল চেয়ে একই আদালতে আবেদন করেন বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান।
আবেদনে বলা হয়, দুই শিশুর সঙ্গে মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির উপস্থিতিতে কথা বলা হোক। সেখানে জেলা প্রবেশন অফিসারের উপস্থিতিও নিশ্চিত করতে হবে। অথবা এ দুজনের উপস্থিতিতে জেলা প্রবেশন অফিসারের কক্ষে শিশুদের সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা কথা বলুক।
পরে ১৬ মার্চ এক আদেশে মহানগর দায়রা জজ বলেন, আবেদনটি (রিভিশন) নামঞ্জুর করে সাক্ষী শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে শিশু আইন-২০১৩ এর ৫৩ ও ৫৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হলো। ওই দিন শিশু আইন মেনে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত।
আদালতের এ আদেশের পরে শিশু দুটিকে তাদের অফিসে হাজির করতে নোটিশ দেয় পিবিআই। কিন্তু শিশু আইন অনুযায়ী তারা এটা করতে পারেন না। এ কারণে শিশু আইন অনুসারে যাতে শিশু দুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায় তার নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত বুধবার (৮জুন) আদেশের এ দিন ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আকতার বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। গত বছরের ১২ মে পিবিআই এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একই দিন বাবুলের শ্বশুর বাদী হয়ে বাবুলকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে এ মামলায় পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে আদালত সেটি গ্রহণ করেন।