জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল আলম বাবুকে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগে এই মামলা করা হয়।
সোমবার (৬ জুন) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জগলুল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালত সাজা পরোয়ানা জারি করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে বলা হয়, আসামির বয়স মাত্র ২৩ বছর। তার স্বল্প বয়স বিবেচনায় তাকে তথ্য ও প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত/২০১৩) এর ৫৭ ধারায় ন্যূনতম সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
২০১৫ সালের ৫ আগস্ট আসামি শামসুল আলম বাবুর বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়া থানায় তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। একই বছরের ২১ জুলাই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট জাবির সরকার ও রাজনৈতিক বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল আমিন সেতু বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের ওপর একটি কলাম পত্রিকায় প্রকাশ করে। ওই লেখাটি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোরশেদুর আকন্দ ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় শামসুল আলম বাবু তার ‘মো. কবির মামু’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি মন্তব্য করেন। যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন।
এ নিয়ে পরবর্তীসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। আল আমিন সেতু লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে শামসুল আলম বাবুকে আটক করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. ইয়াকুব আলী মিয়া আসামি বাবুকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে এজাহার জমা দেন।
এজাহারের সঙ্গে আসামি বাবুর ফেসবুক আইডি হতে দেওয়া বক্তব্যের হার্ড কপি এবং আল আমিন সেতুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগের কপি সংযুক্ত করা হয়।