চার দিনের ব্যবধানে দুইবার ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার ভিকটিম এসএসসি পরীক্ষার্থীর গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩১ মে) রাত ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া এলাকায় চাচা মুনসুর আলী বাড়ি থেকে ঝুলে থাকা অবস্থার তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত শিক্ষার্থীর নাম মাইমুনা ইয়াসমিন। সে সাতক্ষীরা শহরের দক্ষিণ কাটিয়া ঈদগাহ এলাকার আজিজুর রহমানের মেয়ে। মাইমুনা এবার নবারুণ বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, ওই শিক্ষার্থী গত ৩ ও ৭ মে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলো। ৯ মে তার বাবা সাতক্ষীরা সদর থানায় দুই জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিমের বক্তব্যের সাথে মামলায় বলা অভিযোগ গোলমেলে মনে হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ১০ মে মেয়েটি সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহারের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়। একই দিনে সদর হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। মামলার পর থেকে মেয়েটি বিমর্ষ ছিল।
মিজানুর রহমান আরও জানান, মরদেহ উদ্ধারের দিন দেখা যায়, মেয়েকে ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ রেখে বাবা চাবি নিয়ে গিয়েছিলেন।
এদিকে দক্ষিণ কাটিয়ার ঈদগাহ পাড়ার একাধিক ব্যক্তি দাবি করেন, মাইমুনার ফুফু ময়না খাতুনের ছেলে আল আমিন তাকে ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধর্ষণ করে আসছিল। এ ছাড়া বাবা মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে মারপিট করতো। ফলে তাকে কখনও কখনও ঘরের চালের ওপর রাত কাটাতে দেখেছেন।
তারা জানান, মানসিক বিষাদে ভোগা মেয়েটিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রাখা হতো। ৭ মে পুলিশ মাইমুনার লেখা একটি চিঠি উদ্ধার করে। চিঠিতে সে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ ছিল।
স্থানীয়দের আরও দাবি, ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় মাইমুনাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম কবীর জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের বাবা বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।