মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে এখনই ব্যাপক টিকা কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কর্মকর্তারা।
তবে, এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার (২৭ মে) ডব্লিউএইচও’র বৈশ্বিক সংক্রামক ঝুঁকি প্রস্তুতি বিষয়ক পরিচালক সিলভি ব্রায়ান্ড বলেন, “আমরা মনে করি, যদি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি তাহলে এটিকে সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।”
জেনেভায় জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থাটির বার্ষিক সমাবেশে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি এক টেকনিক্যাল ব্রিফিংয়ে ব্রায়ান্ড জানান, দ্রুত শনাক্ত ও আক্রান্তদের আইসোলেশনে রাখা এবং আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা মানুষদের চিহ্নিত করা ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রায়ান্ড বলেন, “সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উচিত প্রথম প্রজন্মের স্মলপক্স টিকার তথ্য বিনিময় করা, যা মাংকিপক্সের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বে এই টিকার কত সংখ্যক ডোজ বিদ্যমান আছে তা নিশ্চিতভাবে আমাদের জানা নেই। তাই আমরা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি ডব্লিউএইচওকে তাদের মজুত সম্পর্কে জানানোর জন্য।”
মাঙ্কিপক্স সাধারণত একটি হালকা ভাইরাল সংক্রমণ। ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি), দক্ষিণ সুদান এবং নাইজেরিয়াসহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশে এটি স্থানীয় একটি রোগ।
তবে, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আমেরিকাসহ অ-স্থানীয় দেশগুলোতে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের ঘটনা ঘটেছে।
এ বছরের মে মাসের শুরু থেকে, ২০টি দেশে প্রায় ৩০০টি নিশ্চিত বা সন্দেহভাজন মাঙ্কিপক্সের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে।
ব্রায়ান্ড জোর দিযয়ে জানান, বর্তমানে ভাইরাসটির আরও বিস্তার রোধ করার সুযোগ রয়েছে। ভাইরাসটি সংক্রামিত ব্যক্তি বা প্রাণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে বা দূষিত উপাদানের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে, এটির বিস্তার অন্যান্য ভাইরাস যেমন করোনাভাইরাসের তুলনায় অনেক ধীর।
ডব্লিউএইচও’র গুটিবসন্ত বিষয়ক সেক্রেটারিয়েটের প্রধান রোসামুন্ড লুইস বলেন, “বর্তমানে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে গণটিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই এবং এর পরিবর্তে সংক্রমিত ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের জন্য লক্ষ্যযুক্ত টিকা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
মাঙ্কিপক্সের জন্য বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট টিকা নেই, তবে গুটিবসন্তের টিকা ভাইরাসটির বিরুদ্ধে ৪৫% পর্যন্ত সুরক্ষা দেয় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে ডিআরসিতে মানুষের মধ্যে মাঙ্কিপক্স প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল।