ইউক্রেনের আরও একটি শহরের পূর্ণ দখল গেল রাশিয়ার হাতে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দনেতস্কের লিমান শহরটি রুশ সেনারা দখল করেছে বলে স্বীকার করেছেন দনেতস্কের গভর্নর পাভলো কিরিলেনকো।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে কিরিলেনকো বলেন, ‘লিমানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে রুশ সেনারা।’
তিনি আরও জানান, দনেতস্কের দুই শহর সেভেরোদনেতস্ক ও পার্শ্ববর্তী লাইসিচেনস্কেও ইউক্রেনের সেনাদরে সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে রুশ সেনাদের।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই প্রদেশ দনেতস্ক ও লুহানস্ককে একত্রে ডনবাস বলা হয়। এই দু’টি অঞ্চলে আগে থেকেই শক্তিশালী ছিল ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
রাশিয়া বেশ পরিকল্পিতভাবে সেনা অভিযান পরিচালনা করছে উল্লেখ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওলেকসি আরেস্তোভিচ বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা লিমান শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছি। এতে বোঝা যাচ্ছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর অভিযানসংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা ও কৌশলগত দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর ঘোষণা দেন পুতিন। তার দু’দিন আগে দনেতস্ক ও লুহানস্ককে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বর্তমানে এই দুই অঞ্চলকে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সর্বাত্মক লড়াইয়ে নেমেছে রুশ সেনারা। যুদ্ধে হাজার হাজার সেনাসদস্য ও কর্মকর্তার মৃত্যু হলেও পিছু হটার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না রুশ সেনাদের মধ্যে।
ইতোমধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর শহর খেরসন, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর মারিউপোল এবং দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। সর্বশেষ লিমানের নিয়ন্ত্রণও চলে গেল তাদের হাতে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, ধীর গতিতে হলেও নিজ লক্ষ্যের দিকে সফলভাবে এগোচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যদি রাশিয়ার অভিযান দীর্ঘায়িত হয়, তহালে ডনবাস অঞ্চল জনশূন্য হয়ে পড়বে।
ইউক্রেনের স্লোভিয়ানস্ক শহরে যাওয়ার পথে লিমান শহরের অবস্থান। স্লোভিয়ানস্কের দখল নেওয়া দনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার মূল লক্ষ্যগুলোর একটি। এ ছাড়া রেল যোগাযোগের জন্য লিমান শহরটি গুরুত্বর্পূণ। বেশ আগে থেকেই এর দখল নেওয়ার চেষ্টা করছিল রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।