ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা’ সূর্যসেন হলের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই হলের ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের ২৪৯ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সাজ্জাদুল হক সাঈদি। তিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী মানিকুর রহমান মানিক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি হল ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের অনুসারী। সিয়াম ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।
বুধবার (২৫ মে) সকালে এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক মকবুল হোসেন ভুঁইয়ার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। নির্যাতনের পর থেকে কানে শুনতে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাজ্জাদুল বলেন, আমি আমার কক্ষে অনলাইন ক্লাস করার সময় মানিক ভাই ও তার বন্ধুরা আমার রুমে আসেন। এসেই আমাকে বলেন, এই বেয়াদব তোর ভাইয়েরা আসছে দেখিস না, উঠে সালাম দিস না কেন? বলেই বাবা-মা নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তিনি আমাকে তার কাছে যেতে বললে আমি তার কাছে যাই। ঠিক তখনি আকস্মিকভাবে তিনি আমার মুখ-কান বরাবর চড় মারেন। একইসঙ্গে গায়ের সর্ব শক্তি দিয়ে আমাকে লাথি মারেন। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারার মাধ্যমে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও নির্যাতন করেন। এ ঘটনার পর থেকে আর কানে শুনতে পাচ্ছি না।
তিনি বলেন, আমার সাথে ঘটা অন্যায়ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিচার চাই। আমি হল প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
প্রত্যক্ষদর্শী তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, মানিক ভাই হঠাৎ রুমে এসে সাজ্জাদকে ডাকেন এবং পরে সে ভাইয়ের কাছে যেতে না যেতেই তাকে গালিগালাজ করতে করতে থাপ্পড় মারেন। এরপর সাজ্জাদকে লাথি মেরে ও কিল-ঘুষি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। অহেতুক শুধুমাত্র সালাম না দেওয়ার কারণে সাজ্জাদকে বেধড়কভাবে মারধর করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মানিকুর রহমান মানিকের সঙ্গে গতরাত থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। রাতে তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইলে ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। বুধবার সকালে কল করা হলেও রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান বলেন, তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তেমন বড় কোনো ঘটনা না। কেউ হয়ত বাড়িয়ে বলছে। দুজনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে দেব। আমাদের হলে কাউকে নির্যাতনের কোনো সুযোগ নেই।
বিষয়টি জানতে হলে প্রভোস্ট অধ্যাপক মকবুল আহমেদের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।