ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ রাউন্ডে এসে শিরোপা জয়ের সুযোগ ছিল ম্যানচেস্টার সিটি আর লিভারপুল দুই দলেরই। যদিও এক পর্যায়ে দুই দলই ছিল পা হড়কানোর মুখে। তবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শিরোপা লড়াইয়ের পর দুদলই নিজ নিজ ম্যাচে জিতলেও শেষ হাসি হেসেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরাই।
৩৭ ম্যাচ শেষে যথাক্রমে ৯০ ও ৮৯ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগের শেষ রাউন্ডে মাঠে নেমেছিল ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল। একদিকে ইতিহাদে অ্যাস্টন ভিলাকে আতিথ্য দিচ্ছিল ম্যানচেস্টার সিটি, অন্যদিকে অ্যানফিল্ডে ওলভসের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল লিভারপুল। শিরোপা জয়ের জন্য লিভারপুলের শুধু নিজেদের ম্যাচে জিতলেই হতো না, সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হতো অ্যাস্টন ভিলার দিকেও। অ্যাস্টন ভিলার দায়িত্বে নিজেদের ক্লাব কিংবদন্তি স্টিভেন জেরার্ড বলেই হয়ত বিশেষ কিছুর ব্যাপারে আশাবাদী ছিল অলরেডরা।
তবে নিজেদের ম্যাচে তৃতীয় মিনিটেই ওলভসের পেদ্রো নেতোর গোলে পিছিয়ে পড়ে লিভারপুল। তবে ২৪ মিনিটে ঠিকই সেনেগালিজ ফরোয়ার্ডের গোলে সমতায় ফিরে অলরেডরা। কিন্তু তাদের যে শুধু ড্র করলেই হবে না, জিততেই হবে। সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে সিটিজেনদের পরাজয়েরও।
তবে ম্যাচে সমতায় থাকা অবস্থায়ই এক পর্যায়ে শিরোপা খানিকটা সুবাস পেতে শুরু করে লিভারপুল। ৩৭ মিনিটে ম্যাটি ক্যাশের গোলে নিজেদের মাঠে পিছিয়ে পড়ে ম্যানসিটি। ম্যানচেস্টারের ক্লাবটির বিপদ আরও ঘণীভূত হয় যখন ৬৯ মিনিটে সাবেক লিভারপুল প্লে-মেকার ফিলিপে কুতিনহো গোল করে অ্যাস্টন ভিলার লিড দ্বিগুণ হয়। পয়েন্ট টেবিলে তখন ম্যানসিটি আর লিভারপুল সমান ৯০ পয়েন্ট নিয়ে থাকলেও সিটিজেনরা গোল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। কিন্তু লিভারপুল যেকোনোভাবে নিজেদের ম্যাচে লিড নিলে তারাই এগিয়ে যেতো শিরোপা দৌড়ে।
এরপরেই ম্যানসিটির বাজিমাত। ৭৬ মিনিটে জার্মান মিডফিল্ডার ইলকায় গুন্ডোগান ম্যানসিটির হয়ে ব্যবধান কমান। মিনিট দুয়েক না যেতেই সিটিজেনদের সমতায় ফেরান স্প্যানিশ তরুণ তুর্কি রদ্রি। ততক্ষণে শিরোপা প্রায় নিজেদের পকেটে পুরে ফেলেছে তারা। তিন মিনিট পর প্রিমিয়ার লিগের এবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড় কেভিন ডি ব্রুইনের সহায়তায় নিজের দ্বিতীয় গোল করেন গুন্ডোগান। ৫ মিনিটের ঝড়ে ৩-২ গোলের জয়ে ম্যাচ ও শিরোপা পুরো বগলদাবা করে নেয় গার্দিওলার শিষ্যরা।
এদিকে, অ্যানফিল্ডে শেষদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচে ফিরে এসেছিল লিভারপুলও। ৮৪ ও ৮৯ মিনিটে যথাক্রমে মোহামেদ সালাহ ও অ্যান্ড্রু রবার্টসনের গোলে ৩-১ গোলের জয় পায় ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। তবে ম্যানসিটির জয়ে তাদের চেয়ে এক পয়েন্ট পেছনে থেকেই তাদের মৌসুম শেষ করতে হলো। একই সঙ্গে বিসর্জন দিতে হলো শিরোপাত্রয়ীর স্বপ্নও।