রাশিয়া শুক্রবার পূর্ব ইউক্রেনের উপর আক্রমণ বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছে, কামান, রকেট লঞ্চার এবং বিমান ব্যবহার করে দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে আঘাত হানা হচ্ছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, আবাসিক জেলাগুলোতে বাড়িঘর ধ্বংস করেছে এবং বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে। খবর ভয়েস অব আমেরিকার
ডনবাসে নতুন রুশ অভিযান ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলকে ধ্বংস করেছে এবং এটাকে ‘নরকে’ পরিণত করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার তিনি মস্কোর বিরুদ্ধে নির্বিচার বোমা হামলা চালানোর অভিযোগ আনেন এবং এমন মন্তব্য করেন।
ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণাঙ্গ সামরিক অভিযান শুরু করার পর ইউক্রেনের রাজধানী দখল করতে ব্যর্থ হয় রাশিয়া। এরপর থেকে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এলাকা নিয়ে গঠিত ডনবাসের আরও অঞ্চল দখলের চেষ্টা করছে তারা। এক্ষেত্রে ভারী কামান ও ট্যাঙ্ক ব্যবহার করছে রুশ বাহিনী। মূলত, রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষ হয়ে এ ডনবাস অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে মস্কো।
এ বিষয়ে জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার এক ভাষণে বলেন, ‘আগ্রাসী শক্তি আরও বেশি চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা ডনবাসকে ‘নরকে’ পরিণত করেছে। এটি কোনো অতিরঞ্জিত বর্ণানা নয়।’
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার লুহানস্ক অঞ্চলের সেভেরোদোনেটস্ক শহরে নৃশংস ও নির্বিচার বোমা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছে। একইসাথে ওডেসা অঞ্চলে, মধ্য ইউক্রেনের শহরগুলোতে অব্যাহত হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। তাদের আক্রমণে ডনবাস অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা অসংখ্য ইউক্রেনীয়কে হত্যা করার একটি ইচ্ছাকৃত ও অপরাধমূলক প্রচেষ্টা। তারা যতটা সম্ভব বাড়িঘর, সামাজিক সুবিধা ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র ধ্বংস করতে চাইছে।
যুদ্ধের প্রথম দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সৈন্যরা রাজধানী কিয়েভ দখল করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে ডনবাস এখন তার লক্ষ্যবস্তু।
শুক্রবার জি সেভেন গ্রুপের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্রুপ অফ সেভেন দেশের অর্থমন্ত্রীরা রাশিয়ার আগ্রাসনে ইউক্রেনের আর্থিক সহায়তার জন্য প্রায় ২ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
জি সেভেন, বিশ্বের কয়েকটি বৃহত্তম অর্থনীতির নেতাদের সংগঠন – কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। সংগঠনটি বলেছে যে এই তহবিল ইউক্রেনকে ‘তার অর্থায়নের ফাঁক বন্ধ করবে এবং ইউক্রেনীয় জনগণের জন্য মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ নিশ্চিত করবে’।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে অন্তত ৩,৮৮১ জন নিহত এবং ৪ হাজার ২৭৮ জন আহত হয়েছেন। কিন্তু, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, ‘ইউক্রেনের মোট ৬৪ লাখ মানুষ অন্য দেশে পালিয়ে গেছেন এবং ৭৭ লাখের বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।