বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় আলোচিত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) কাছে বাংলাদেশ ও ভারতের ছাড়াও গ্রেনাডার পাসপোর্টও পাওয়া গিয়েছে। ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস (আরসিএন) জারি করেছে।
সোমবার (১৬ মে) এক বিবৃতিতে ভারতের ডিরেক্টরেট অফ এনফোর্সমেন্ট (ইডি) এ কথা জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাটি প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০০২ এর অধীনে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ। কারণ প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা আত্মসাতের এবং বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগ আছে।
রবিবার গভীর রাতে স্পেশাল ইডি থেকে পিকে হালদারের রিমান্ড আবেদন করা হয়। সোমবার সকালে রিমান্ড মঞ্জুর করেন উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা আদালত। এরপর ইডি ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, পিকে হালদারকে আরও ২ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে, ১৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নাম পাল্টে “শিবশঙ্কর হালদার” পরিচয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে অশোকনগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।
বাংলাদেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদার ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। ভারতে পিকে হালদারের পাচার করা টাকায় গড়া বিপুল সম্পদের খোঁজ পায় গোয়েন্দারা। ভারত সরকারের তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তার বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা মূল্যবান সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে। একইসঙ্গে কলকাতা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা সরানো হয়। এছাড়া এফএএস ফাইন্যান্স, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স এবং পিপলস লিজিং থেকে একই কায়দায় আরও প্রায় ৭৫০০ কোটি টাকা ঋণের নামে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে পিকে হালদার ও তার সিন্ডিকেট।
সব মিলিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে এফএএস ফাইন্যান্স থেকে প্রায় ২২০০ কোটি টাকা, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে ২৫০০ কোটি টাকা, পিপলস লিজিং থেকে প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে আত্মসাৎ ও পাচার করা হয়েছে।