রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ১৯৪৫ সালের মতো এবারও আমাদের (রাশিয়ার) জয় হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের ৭৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (৮ মে) একথা বলেন তিনি।
এদিকে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের ৭৭তম বার্ষিকীতে সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সোমবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পর ১৯৪৫ সালের ৯ মে জার্মানির এডলফ হিটলারের নেতৃত্বাধীন নাৎসি সেনাদের পরাজিত করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। আর সেই থেকেই এ দিনটিকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে থাকে মস্কো।
তবে অন্য বছরের তুলনায় চলতি বছর রাশিয়ার এই বিজয় দিবসের আলাদা একটি তাৎপর্য সামনে চলে এসেছে। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে মহাদেশটিরই আরেকটি দেশে সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে রাশিয়া।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া প্রেসিডেন্ট পুতিন রোববার বলেন, ‘পূর্বপুরুষদের মতো আজ আমাদের সৈন্যরা আত্মবিশ্বাসের সাথে তাদের জন্মভূমিকে নাৎসি নোংরা থেকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করছে। ১৯৪৫ সালের মতো এবারও বিজয় হবে আমাদের।’
পুতিন বলেন, ‘নাৎসিবাদের কারণে বিভিন্ন দেশের মানুষ ব্যাপক কষ্ট ও নির্যাতন সহ্য করেছে। আর তাই নাৎসিবাদের পুনর্জন্ম রোধ করা আজ আমাদের সকলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে তাদের পিতা ও পিতামহের এই স্মৃতি যথেষ্ট মূল্যবান হতে পারে। অবশ্য পুতিন শুধু সৈন্যদেরই নয়, ‘হোম ফ্রন্টে (দেশের ভেতরে)… অগণিত ত্যাগের বিনিময়ে নাৎসিবাদকে ধ্বংস করা’ বেসামরিক ব্যক্তিদের নিয়েও কথা বলেছেন।
‘দুঃখজনকভাবে, আজ নাৎসিবাদ আরও একবার মাথা তুলেছে’ দাবি করে প্রেসিডেন্ট পুতিন জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেন ফ্যাসিবাদের খপ্পরে রয়েছে এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ-ভাষী সংখ্যালঘুদের জন্য হুমকি সৃষ্টি করা হয়েছে। মূলত তাদেরকে ‘মুক্ত’ করতেই ওই অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে মস্কো।
রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যারা পরাজিত হয়েছিল তাদের আদর্শিক উত্তরসূরিদের আটকে রাখা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। এই যুদ্ধকে ‘মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধ’ বলে মনে করে থাকে মস্কো। মূলত তিনি রাশিয়ানদের ‘প্রতিশোধ নিতে’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া পুতিনের ভাষণে উঠে এসেছে ইউক্রেনীয়দের জন্য শুভকামনাও। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি ‘ইউক্রেনের সকল বাসিন্দার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ এবং ন্যায্য ভবিষ্যত’ কামনা করেন।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। তাই এই বিজয় দিবসটি অর্থাৎ ৯ মে তাদের কাছে একটি গৌরবময় ঐতিহ্য। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয়কে স্মরণ করবে মস্কো।