ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলের সেই ইস্পাত কারখানায় আটকে পড়া সব বেসামরিক নারী, শিশু ও বৃদ্ধকে উদ্ধার করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশুচুক জানিয়েছেন, মারিউপোলে মানবিক উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। একইসঙ্গে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও একই কথা জানানো হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মারিউপোলের আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্ট থেকে তিনশ’র বেশি বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে সেখান থেকে আহত লোকজন ও সেনাদের উদ্ধার করার পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে। তবে তা অনেক কঠিন হবে বলে মনে করছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
যুদ্ধ শুরুর পর প্রায় দুই মাস ধরে অবরুদ্ধ মারিউপোলে আটকে আছে ইউক্রেনের অনেক নাগরিক। সবশেষ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে শহরের আজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টে আত্মগোপন করেন নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ কয়েকশ যোদ্ধা। পুরো শহর নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলেও ইস্পাত কারখানাটি এখনও ইউক্রেনের সেনাদের দখলে রয়েছে।
তবে শেষ পর্যায়ে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সহযোগিতায় ওই ইস্পাত কারখানা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বের করে নেয়ার সুযোগ দেয় রাশিয়া। শনিবার সেখান থেকে তিন শতাধিক বেসামরিক নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে বলে এক ভিডিও বার্তায় জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এর আগে, আলাদা এক ভিডিওবার্তায় তিনি জানান, মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় আটকে পড়া সেনাদের উদ্ধারে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। তবে তাদের হত্যা করা হলে রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা স্থগিত করার হুঁশিয়ারিও দেন জেলেনস্কি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
উল্লেখ্য, প্রায় পাঁচ লাখ বাসিন্দার মারিউপোল শহরটি দখল করা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি আজভ সাগরে ইউক্রেনের কৌশলগত বন্দর এবং ডনবাস অঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর কাছেই অবস্থিত।