ঈদের দিন হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সকাল থেকে এসব দর্শনার্থী ও পর্যটকের আগমন ঘটতে থাকে। বেলা যত বাড়তে থাকে ততই ভিড় বাড়তে থাকে সমুদ্র সৈকতে। বাস, মাইক্রোবাস প্রাইভেটকার, পিকআপ, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা নিয়ে সৈকতে আসেন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।
সমুদ্রের নীল জলে গা ভিজিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে সেফলি তুলে দিনটি উপভোগ করেন অনেকে। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চে বসে উপভোগ করছেন সমুদ্র ও প্রকৃতিকে। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের তালে তালে নেচে গেয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন আগত পর্যটক এবং দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ ওয়াটার বাইক নিয়ে সমুদ্রে বেড়িয়েছেন।
কুয়াকাটার কুয়া, সৈকতের লেম্বুরবন, তিন নদীর মোহনা, গঙ্গামতির লেক, লাল কাকড়ার চর, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরেছেন পর্যটকরা। আবার কেউ কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে সৈকতের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
তবে ঈদের দিন সৈকতে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বেশিরভাগই পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলাসহ আশপাশের এলাকার বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি ভিনদেশি পর্যটকদের আগমন এবার ঈদের আমেজে ভিন্নতা যোগ করেছে। মেঘলা আকাশ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদের প্রথম দিনে হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ঈদের প্রথম দিন আবাসিক হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলোর ৮০ ভাগ কক্ষই বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে একটানা ৫-৬ দিন শতভাগ কক্ষই বুকিং থাকবে বলে জানিয়েছে হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষ। ১৫ দিন আগে থেকেই অনেকেই অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন।
রাখাইন মহিলা মার্কেট, ঝিনুক মাকের্ট, মিশ্রিপাড়া তাতঁপল্লী সবখানেই কেনাকাটায় ভিড় দেখা গেছে। ফিস ফ্রাইয়ের দোকানেও সিরিয়াল দিয়ে কাঁকড়া, চিংড়িসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই ও বারবি কিউ খেতে দেখা গেছে।
আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা জানিয়েছেন, রমজানের এক মাস তারা রোজা রেখেছেন। ইচ্ছা থাকলেও ঘর থেক বেড় হতে পারেননি। একটানা ৯ দিনের ছুটি পেয়ে সমুদ্রের পাড়ে অবকাশ যাপনে বেড়িয়ে পড়েছেন তারা।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ জানান, এবারের ঈদের লম্বা ছুটিতে কুয়াকাটায় অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটবে। ইতিমধ্যে প্রথম শ্রেণির হোটেল মোটেল রিসোর্টগুলোর প্রায় ৭০ ভাগ রুম অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক বলেন, আগত এসব পর্যটকদের নিরাপত্তায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকেও নজরদারি করা হচ্ছে। পর্যটন পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ ও র্যাব মহাসড়কে আগত পর্যটকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিতে কাজ করছে।