ভুল চিকিৎসায় বরিশাল নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ করায় রোগীর স্বজনদের আটকে মারধর এবং পরে হাসপাতালের স্টাফদের গণধোলাই দেওয়ার খবর মিলেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বরিশাল নগরের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা সংলগ্ন সেন্ট্রাল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। মৃত রুবি আক্তার বরিশাল নগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের দিয়াপাড়া এলাকার রফিক সিকদারের স্ত্রী।
মৃত রুবির দেবর সুমন সিকদার বলেন, আমার ভাবি রুবি আক্তার গর্ভবতী ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ব্যথা ওঠায় ৮টায় ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা ৬টায় বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুন্সী মুবিনুল হক সিজার করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পরই বের হয়ে জানান ভাবি মারা গেছে। তবে বাচ্চা সুস্থ আছে। কিন্তু অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশের আগে ভাবি পুরোপুরিই সুস্থ ছিল। ভাবি কিভাবে মারা গেছে সেটা জানতে চাইলে আমাদের সঙ্গে হাসপাতালের স্টাফরা খারাপ ব্যবহার করে। পাশাপাশি যে পরীক্ষাগুলো দেওয়া হয়েছিল সেই পরীক্ষার রিপোর্টগুলোতে তারিখ দেওয়া রয়েছে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। এর প্রতিবাদ করলে আমাদের আটকে মারধর করা হয়। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে আমাদের উদ্ধার করে এবং হাসপাতালের স্টাফদের গণধোলাই দেয়। এরপরেই হাসপাতালের স্টাফরা পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল স্টাফদের মারামারির পর স্বজনদের কয়েকজন হাসপাতালে ইট নিক্ষেপ করে। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের স্টাফরা পালিয়ে যায়।
এদিকে হাসপাতালে গিয়ে কোনো চিকিৎসক বা স্টাফ পাওয়া যায়নি। দেখা যায়নি কোনো রোগীকেও।
এই বিষয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মুন্সী মুবিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সরকারি ওয়েব সাইটে যে নাম্বারটি দেয়া রয়েছে তার সেটি রিসিভ করে অন্য একজন ব্যক্তি। আর হাসপাতালেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক লোকমান হোসেন বলেন, রোগী মৃত্যু নিয়ে স্বজন ও হাসপাতালের লোকজনের সঙ্গে ঝামেলার খবর শুনে এখানে এসেছি। এসে হাসপাতালের কাউকে পাইনি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। মৃত রোগীর স্বজনদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।