টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেশ কিছু দিন ধরেই বাড়ছে। ডলারের চাহিদা বাড়তে থাকায় সম্প্রতি ডলারের দামে বেশ খানিকটা অস্থিরতাও তৈরি হয়েছে। এতে আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে টাকার বিপরীতে ডলারের দামও গিয়ে ঠেকেছে সর্বোচ্চে। এ সংকট সামাল দিতে প্রতিদিন ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চাহিদা অনুযায়ী ডলারের জোগান কমে গেছে দেশের মুদ্রাবাজারে। এমন পরিস্থিতিতে আমদানি দায় পরিশোধে কোনও ব্যাংক যেন সমস্যায় না পড়ে সেজন্য ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ আরও কিছু নীতি নির্ধারণী পদক্ষেপও নিয়েছে গত কয়েকদিনে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের যা যা করণীয়, তাই করছে। তিনি জানান, সরবরাহ বাড়াতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে বিলাসবহুল পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডলারের সরবরাহ বাড়াতে ‘ডলার বন্ডে’ সীমাহীন বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। প্রবাসীদের জন্য চালু থাকা এ বন্ডের সুদের হারও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে সুদ আকারে ডলার দেশ থেকে বের হয়ে যাওয়া কমে যাবে। আবার এ বন্ডে বিনিয়োগ বাড়লে ডলার দেশে ঢুকবে।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক জরুরি ছাড়া অন্য পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম ২৫ শতাংশ সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্ক পদক্ষেপেও কাজে আসছে না। অর্থাৎ আন্তঃব্যাংক লেনদেনে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়েই চলেছে। ব্যাংক কিংবা খোলা বাজারে নগদ ডলার কিনতে এখন গুনতে হচ্ছে ৯২ টাকার মতো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার বিক্রির মাধ্যমে বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি আন্তঃব্যাংকে মৌখিকভাবে ডলার ঠিক করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এলসি খোলার জন্য বর্তমানে প্রতি ডলারের দাম ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। গত আগস্টের শুরুতে যেখানে আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৬ টাকা ২০ পয়সা। গত ১ মার্চ যা ছিল ৮৬ টাকা। এক বছর আগে ২০২১ সালে এ দর ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক দশমিক ৬৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।