ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাংক, সাঁজোয়া যানসহ যুদ্ধে ব্যবহৃত বিভিন্ন যান দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। এরপর সেগুলো নিজেদের ঘাঁটিতে নিয়ে মেরামত করে ডনবাসের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের মস্কোপন্থী সেনাদের নিকট সরবরাহ করছে।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘাঁটিটি রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম মেরামতের জন্য স্থাপিত হলেও রুশ সেনারা জব্দ করা ইউক্রেনীয় সামরিক সরঞ্জাম মেরামতের ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। তারা মাত্র আট ঘণ্টায় একটি বিটিআর-৮০ সাঁজোয়া যানের ইঞ্জিন প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। এ পর্যন্ত তারা ট্যাংক, সাঁজোয়াসহ ১২টিরও বেশি যানবাহন পুনরুদ্ধার করেছে।
রুশ সামরিক বাহিনীর দাবি, পুনরুদ্ধারকৃত বাহনগুলো রাশিয়ার অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল দ্বারা আঘাত করা হয়েছিল।
তবে সামরিক সরঞ্জাম পুনরুদ্ধারের এই উদ্যোগ রাশিয়ার জন্য নতুন কিছু নয়। এর আগে মার্চের শেষের দিকে ইউক্রেনের গোয়েন্দা অধিদপ্তর (জিইউআর) দাবি করেছিল, সংঘাতে ইউক্রেনের যে সমস্ত সামরিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে আবারও ব্যবহার উপযোগী করে তোলার কাজ শুরু করেছে রুশ বাহিনী।
জিইউআর বলছে, “যানবাহনগুলো থেকে মূল্যবান ধাতু সম্বলিত অপটিকাল এবং ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস চুরি হয়েছে।”
সেইসঙ্গে ইউক্রেনের অনেকগুলো ট্যাংক সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং কিছু বাহনে ইঞ্জিন ছিল না বলে উল্লেখ করা হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে।
ইউক্রেনীয়রা মিডিয়ায় রাশিয়ার পরিত্যক্ত এই যানগুলোকে পুরস্কার হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া নিজেই এখন ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।
তবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দাবি, এ পর্যন্ত রাশিয়ার ৭৭৩টি ট্যাংক, দুই হাজার ২টি সাঁজোয়া যান, ১৪৬টি হেলিকপ্টার, ৩৭৬টি আর্টিলারি সিস্টেমসহ হাজারখানেক রুশ সেনাকে বন্দী করেছে তারা। তবে ইউক্রেনের এমন দাবি আমলে নিচ্ছে না রাশিয়া।
তবে সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক শক্তিতে ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়া যোজন যোজন এগিয়ে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ২০২১ সালের বার্ষিক র্যাংকিং অনুসারে, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সক্ষমতায় বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। আর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সামরিক ট্যাংকের মালিকও রাশিয়া।