সাভারের রানা প্লাজার ভবন ধ্বসের নয় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো আহত ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। এমনকি জোরপূর্বক কারখানায় প্রবেশ করিয়ে এতগুলো শ্রমিক হত্যা করা হলেও সোহেল রানার কোনো বিচার করা হয়নি।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রমিক নেতা, রানা প্লাজার আহত ও নিহতদের স্বজনেরা ।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন ও রানা প্লাজা গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রমিক নেতার পাশাপাশি আহত রানা প্লাজার শ্রমিকরাও বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, “নয় বছর হয়ে গেলেও এই ঘটনার মুল হোতা সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। এখন পর্যন্ত হতাহত শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি কোনো ক্ষতিপূরণ, করা হয়নি সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা। সে কারণে তারা আজকে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।”
রানা প্লাজার জায়গা অধিগ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবারের পুনর্বাসন এবং ২৪ এপ্রিলকে শোক দিবস ঘোষণা করার দাবি জানান তিনি। এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “শুধুমাত্র রানা প্লাজা নয়, তাজরীন, স্পেকট্রামসহ এই পর্যন্ত বাংলাদেশের যে সকল গার্মেন্টসে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে আজ পর্যন্ত কোনো বিচার হয়নি। তাই সোহেল রানাসহ সকল দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জানাই।”
সমাবেশে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মিন্টু বলেন, “রানা প্লাজার ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের এখন পর্যন্ত বিচারের আওতায় আনা হয়নি। যখনই ২৪ এপ্রিল আসে বিচার নিয়ে কথা উঠে। কিন্তু বাকি বছর এ নিয়ে আর কোনো কথা হয় না। সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে কারখানাগুলো নিরাপদ করা হবে। এরপর অ্যাকোর্ড, অ্যালায়েন্স এসেছে তবে কারখানা নিরাপদ হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এখানো বিভিন্ন কারখানায় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে আর শ্রমিকরা জীবন দিতে বাধ্য হচ্ছে। এখনো রানা প্লাজার যে সকল শ্রমিক জীবিত আছেন তারা এই দিনটিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এখানে আসার জন্য ছুটি চাইলে কারখানার মালিকরা তাদেরকে ছুটি দেন না। এখানে যেন আসতে না পারেন সেজন্য তাদেরকে ছুটি দেওয়া হয় না। সরকার ও কারখানার মালিকরা এই দিনটিকে ভুলিয়ে দিতে চায়।”