রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। দুই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে এক হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিউ মার্কেট থানা সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরক আইনে ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকালে নিউমার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ ম কাইয়ুম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, নিউ মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ২৪ জনকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা এক হাজার জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আরেকটি মামলা করেছে। সেই মামলায় অজ্ঞাত আসামি ২০০ জন।
তিনি আরও বলেন, দুটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির। গতকাল (বুধবার) রাতে মামলা দুটি দায়ের হয়েছে। গুরুত্বসহ মামলা দুটি তদন্ত করে দেখছি।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় মোরসালিন (২৬) ও নাহিদ (১৮) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। নাহিদের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা নিউ মার্কেট থানায় মামলা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।
মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। ছাত্রদের অনেকে হেলমেট পরে এবং লাঠি হাতে নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ব্যবসায়ী-কর্মচারীরাও লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো শুরু করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে গোটা নিউ মার্কেট ও সায়েন্সল্যাব এলাকায়। থেমে থেমে সারাদিন চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী এবং প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী-কর্মচারী আহত হন।
সংঘর্ষের রেশ চলে বুধবার দিনভর। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা। বিকেলে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। এরপর রাতে তারা সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসির প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবি জানান।