কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ হাসানের কোনো খোঁজ ছিল না মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সারা দিন। রাতে ফেসবুকে এক ছবির মাধ্যমে স্বামীর খোঁজ পান স্ত্রী ডালিয়া। কিন্তু ততক্ষণে জীবিত থাকলেও আধা-মরা হয়ে ছিলেন নাহিদ। একই দিন রাতে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে স্বামীর লাশ নিতে এসেছেন ডালিয়া। এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, তার স্বামীকে কেন বিনা অপরাধে হত্যা করা হলো।
এসময় তিনি বলেন, কর্মস্থলে যাচ্ছিল আমার স্বামী তাহলে কেন তাকে মেরে ফেলা হলো?
জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্ক ছিল নাহিদ ও ডালিয়ার। সম্পর্কটি চিরস্থায়ী করতে ছয় মাস আগে তারা বিয়ে করেন। সুখেই কাটছিল তাদের দিন। মাত্র ছয় মাসের মাথায় বিধবা হলেন ডালিয়া। মঙ্গলবার থেকে স্বামী নাহিদের ছবি দেখে দেখে কান্না করেই যাচ্ছেন স্ত্রী ডালিয়া।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচর দেওয়ান বাড়ি এলাকার বাসা থেকে বেরিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে যাচ্ছিল নাহিদ। পরে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় তিনি আহত হন। শুভ নামে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
শুভ জানান, নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় নাহিদ আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে নাহিদ মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইসিইউর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তৌফিক এলাহী।
নিহত নাহিদরা ৩ ভাই। সবার বড় তিনি। স্থানীয় বাড়ি কামরাঙ্গীরচর দেওয়ানবাড়ি এলাকায়।
উল্লেখ্য, সোমবার দিবাগত রাতে নিউমার্কেট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরের দিন মঙ্গলবার দিনভর থেমে থেমে ব্যবসায়ী-ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে। এই ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হয়।
তারা ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে থেকে দুই-একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই সংঘর্ষের ঘটনায় মোরসালিন নামে এক যুবক আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্র।