ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা যাতে নিরাপদ হয় সে লক্ষ্যে ১২ দফা দাবি জানিয়েছে বরিশাল নৌযাত্রী ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন। দাবিগুলো তুলে ধরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- ট্রেন স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও বিমান বন্দরের মতো নৌ পরিবহন টার্মিনালে ইজারা প্রথা বাতিল করে টার্মিনাল টোল আদায় বন্ধ করতে হবে।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে নৌ যাত্রী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুর নেতৃত্বে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্থানীয় সরকারের উপ- পরিচালক শহীদুল আলম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০২০-২১ সালে কোভিড মহামারির প্রকোপের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক মানুষ যারা দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা পেশায় নিয়োজিত তারা অধিকাংশ ঘরমুখো হয়নি। এ বছর কোভিডের প্রকোপ না থাকা এবং সপ্তাহব্যাপী ছুটিতে মানুষ আত্মীয়, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে যাবেন। কিন্তু প্রতি বছর ঈদুল ফিতরসহ বড় কোনো ছুটির সময় প্রতিটি নৌযানে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত কয়েকগুণ বেশি যাত্রী বহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে যাত্রী হয়রানি তো আছেই।
তাই এসব সংকট নিরসনে ১২ দফা দাবি বাস্তবায়িত হলে নৌ যাত্রা পুনরায় নিরাপদ ও আরামদায়ক হয়ে ফিরে আসবে।
দাবিগুলো হলো- ট্রেন স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও বিমানবন্দরের মতো নৌ পরিবহন টার্মিনালে ইজারা প্রথা বাতিল করে টার্মিনাল টোল আদায় বন্ধ করতে হবে, নৌ পরিবহনে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে পূর্বের ভাড়া কার্যকর করতে হবে, নৌ পরিবহনে ভ্রমণকারী শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিতে হবে, নৌ পরিবহনে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধ করতে হবে, প্রতিটি নৌ পরিবহনে পর্যাপ্ত বয়া, লাইফ জ্যাকেটসহ সর্বোচ্চ যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রতিটি নৌপরিবহনের স্টাফদের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যাবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে, অবিলম্বে নৌ পরিবহনে যাত্রী বিমা চালু করতে হবে, প্রতিটি লঞ্চের ইঞ্চিন রুমের পাশ থেকে খাবার হোটেল ক্যান্টিন সরিয়ে নিতে হবে, দক্ষ মাস্টার, সুকানি ও গ্রিজার নিয়োগ দিতে হবে এবং ফিটনেসবিহীন নৌযান সার্ভিস বন্ধ করতে হবে, লঞ্চ স্টিমারের ক্যান্টিন ও চায়ের দোকানে অতিরিক্ত দাম নেওয়া যাবে না, নৌযান কর্মচারী ও ঘাট শ্রমিকদের দ্বারা যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, নৌ ভ্রমণকালে যাত্রীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টিসহ অন্য কোনো প্রকার যাত্রী প্রতারণার দায় ও ক্ষয়ক্ষতি নৌ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে এবং ঢাকা-বরিশাল-খুলনা রুটে আগের মতো সপ্তাহে সাত দিন স্টিমার ও অত্যাধুনিক দ্রুতগতিসম্পন্ন নৌ যান চালু করতে হবে।
বরিশাল নৌ-যাত্রী ঐক্য পরিষদের ১২দফা দাবি বাস্তবায়নসহ আগামী ঈদুল ফিতর ও বর্ষা মৌসুমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জান মাল নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে নিরাপদ যাত্রায় নেতারা প্রধানমন্ত্রীর মানবিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় বরিশাল নৌ যাত্রী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক সাকিবুল ইসলাম সাফিন, বনী আমিন তালুকদার, ইয়াসমিন সুলতানা, মিজানুর রহমান, রফিক সরদার, আব্দুর রহমান বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।