পহেলা বৈশাখে কুমিল্লার নগর উদ্যানে দুই কিশোর-কিশোরীর সঙ্গে অসদাচরণ এবং ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে কুমিল্লা জেলার গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দুই সদস্যকে চিহ্নিত করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে ডিবি পুলিশের ওই দুই সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখে কুমিল্লার নগর উদ্যানে বসে গল্প করছিল দুই কিশোর-কিশোরী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে ডিবি পুলিশের একজন সদস্য সামনে গিয়ে তাদের পরিচয় জানতে চান। এরপর তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন তিনি।
এ সময় কিশোরীর মাস্ক খোলার জন্য বলতে গিয়ে তাকে “তুই” করে সম্বোধন করেন পাশে থাকা ডিবি পুলিশের আরেক সদস্য। এরপরই পরিচয় জানতে চাওয়া সদস্য ওই কিশোরকে বলেন, “মুড়ায়া ছাতনা ছিরালামু একবারে।”
ডিবি সদস্যরা এ সময় মেয়েটির বাবার ফোন নম্বর চাইলে তারা ভয়ে মাফ চাইতে থাকে এবং ছেলেটি জানায় মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন। তখন পাশ থেকে একজন বলতে থাকেন, “বিদেশ থেকে (কিশোরীর বাবা) এখনই আসবে, নাহলে অফিসে নিয়ে যাব। অফিস থেকে অভিভাবক এসে নিয়ে যাবে।”
৭০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে ছেলেটিকে একাধিকবার মাফ চাইতে দেখা গেলেও পুলিশ সদস্যরা তাতে কর্ণপাত করেননি।
ভিডিওর বিষয়ে পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, “ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন। বিষয়টি নজরে আসার পর বিকেলে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়। পরে রাতে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ দালিলিক প্রমাণ হিসেবে যে কোনো কিছুর ভিডিও ধারণ করতে পারে। তবে নগর উদ্যানের কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে যে কথাবার্তাগুলো শুনেছি তা কাম্য না।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের ধারণ করা এ ভিডিও কীভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল তাও খতিয়ে দেখা দরকার। এ ঘটনায় যদি ওই কিশোর-কিশোরী কেউ আত্মঘাতী কোনো সিদ্ধান্ত নিতো, সেক্ষেত্রে এর দায়ভার কে নিত?”