ফিনল্যান্ডের সঙ্গে প্রায় এক হাজার ৩০০ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে রাশিয়ার। ফলে ফিনল্যান্ডের রাজনৈতিক কৌশল এবং কূটনীতি রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি সেই ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হতে চেয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া।
সীমান্তবর্তী কোনো দেশকেই ন্যাটোর সদস্য হতে দিতে চায় না রাশিয়া। বাল্টিক অঞ্চলও রাশিয়ার কূটনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সে কারণেই বাল্টিক সাগর অঞ্চলে শক্তিসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। ওই অঞ্চলে কোনোরকম পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করে রাখা যাবে না বলে ইউরোপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রাশিয়া।
রাশিয়া জানিয়েছে, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন যদি আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটোতে যুক্ত হয়, তাহলে বাল্টিক সাগরে শক্তিসাম্যের নীতি তারা আর মানবে না। সেখানে পরমাণু অস্ত্র মজুত করতে তারা বাধ্য হবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দিমিত্রি মেদভেদেভ এ কথা জানিয়েছেন। ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টও ছিলেন তিনি।
মেদভেদেভের বক্তব্য, পশ্চিমা দেশগুলি ইউক্রেন সংকট তৈরি করেছে। এখন তারা রাশিয়ার সীমান্তে অন্য দেশগুলিতেও উত্তেজনা তৈরি করতে চাইছে। ফিনল্যান্ড বা সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হলে পশ্চিমা বাহিনী রাশিয়ার সীমান্তে পৌঁছে যাবে। রাশিয়া কখনোই তা হতে দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে তাদের বাল্টিক অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্র মজুত করতেই হবে।
রাশিয়া কি পশ্চিম সীমান্তে সেনা এবং অস্ত্রের সংখ্যা আগের চেয়ে বাড়িছে? রাশিয়া প্রশাসনের মুখপাত্রকে একথা জিজ্ঞেস করেছিল সংবাদমাধ্যম। তিনি জানিয়েছেন, পুতিন পশ্চিম সীমান্তে শক্তি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সেখানে পরমাণু অস্ত্র মজুত করা হয়েছে কি না, সে কথা স্পষ্ট করে তিনি জানাননি।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়া নিয়ে বরাবরই আপত্তি ছিল রাশিয়ার। যে কারণে ফিনল্যান্ডকে রাশিয়া ন্যাটোর সদস্য হতে দিতে চায় না, ইউক্রেনকেও ঠিক সে কারণেই তারা ন্যাটোর সদস্য হিসেবে দেখতে চায় না। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য এই বিষয়টি অন্যতম। ফলে আজ ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে যা হচ্ছে, ভবিষ্যতে ফিনল্যান্ড সুইডেনকে ঘিরেও তেমনই সংকট তৈরি হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।