নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুরে বাবার কোলে থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত চার বছরের শিশু তাসফিয়া আক্তার জান্নাতের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের সরুরপোল এলাকায় নিহত তাসফিয়ার লাশ নিয়ে অবস্থান নেয় স্থানীয় এলাকাবাসী। এসময় তারা তাসফিয়ার হত্যাকারীদের ছবিযুক্ত ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। এক পর্যায়ে তারা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আসামিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিতে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে তাসফিয়া হত্যার ঘটনায় তার খালু (খালার স্বামী) হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বাদশা, রিমনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি।
বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তাসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পাশের মালেকার বাপের দোকান এলাকার বন্ধু স্টোরে যান আবু জাহের। ওই দোকানে গিয়ে তাসফিয়ার জন্য চকলেট, জুস ও চিপস নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী মামুনের দোকানে এসে ‘তুই (আবু জাহের) ওইদিন বৈঠকে ছিলি’ বলে গালাগালি করেন। এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
পরে দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে প্রথমে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাত পায় তাসফিয়া। পরে তারা বাড়ি যাওয়ার সময় পেছন থেকে আরও দুই রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও জাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে গুলিবিদ্ধ তাসফিয়া ও আবু জাহেরকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় পৌঁছলে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় তাসফিয়া।
এলাকাবাসী জানায়, মাটি কাটার জের ধরে এই হত্যার ঘটনা ঘটলেও এই বিরোধের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত ছিলেন না মাওলানা আবু জাহের বা তার মেয়ে তাসফিয়া। তবে মাটি কাটা নিয়ে বৈঠকে ছিলেন এমন অভিযোগে সন্ত্রাসীদের টার্গেট হন মাওলানা আবু জাহের। আর সেই টার্গেটের বলি হয় ছোট্ট তাসফিয়া।