২০০১ সালে রাজধানীর রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় ঘটে। এ ঘটনায় ওই সময়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। হত্যা মামলাটি আট বছর আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালের রায় ঘোষণা করা হলেও বিস্ফোরক আইনে করা মামলাটি দেড় যুগেরও বেশি সময়েও নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। তবে রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে, শিগগিরই মামলাটি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুলনালের পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভুইয়া বলেন, ‘রমনার বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলাটিতে ৮৪ জনের মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। আগামী ২০ এপ্রিল মামলাটির যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এরপরেই মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হবে। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আশা করছি, খুব শিগগিরই মামলাটি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।’
দীর্ঘ সময়েও কেন বিচার কাজ সম্পন্ন হয়নি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্যান্য আলোচিত বড় জঙ্গি ঘটনাতেও একাধিক মামলা ছিল। ওই মামলাগুলোর বিচারকাজ সম্পন্ন করতে সময় নেওয়ায় রাষ্টপক্ষের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা স্ট্রোকজনিত কারণে অসুস্থ থাকায় দুই বছর সাক্ষ্যগ্রহণ নেওয়া সম্ভব হয়নি। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর এগুলো অন্যতম কারণ।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘রমনার বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মামলাটি যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আমরা আশা করছি মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ হবে।
মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা বিস্ফোরণে ১০ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। এরপর ওই ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলাটির রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। রায়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, বিস্ফোরক আইনে করা মামলাটিতে ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। (সূত্র বাংলা ট্রিবিউন)