রামপালে সংখ্যালঘু শীল বংশের বারোয়ারী পুকুর দখল চেষ্টা

সুজন মজুমদার
সুজন মজুমদার - বাগেরহাট প্রতিনিধি
4 মিনিটে পড়ুন

বাগেরহাটের রামপালে একটি শীল বংশের পৈতৃক বারোয়ারী পুকুর দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রামপাল পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভুক্তভোগী সমর শীল বংশের নিজেদের পৈতৃক পুকুর ও জমি রক্ষার দাবীতে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন নিবেদন করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে ভুক্তভোগীরা উল্লেখ করেছেন যে, উপজেলার উজড়কুড় ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের সমর কুমার শীল গংয়েরা শিবনগর মৌজার জেএল ৫৭, এসএ ১১২ ও ৯১০ নং দাগের ৩১ শতাংশ জমিতে থাকা বারোয়ারী পুকুরটি প্রায় শত বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন। বারোয়ারী ওই পুকুর থেকে পানিপান ও নানান কাজে ব্যবহার করে থাকেন।

অথচ হটাৎ করে প্রতিবেশী আঃ রশিদ শেখ ও বারিক শেখ ওই বারোয়ারী পুকুরটি নিজেদের দাবী করে পুকুরের উত্তর পাড়ের একাংশে জোরপূর্বক ঘিরে ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট শুরু করেন। এতে বাঁধা দিলে সমর শীলদের পরিবারের নারীসহ সদস্যদের কয়েক দফা মারপিট করেন আঃ রশিদ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। বিতর্কিত ওই পুকুর নিয়ে ৭/৮ বার স্থানীয় ভাবে মাপা হয় এবং সীমানা নির্ধারণ করে পিলার গেড়ে দেওয়া হলেও রাতের আঁধারে নির্ধারিত ওই সীমানার পিলার তুলে ফেলেছে তারা। আদালতের ১৪৪ মামলা চলমান থাকলেও ড্রেজার দিয়ে ওই পুকুর টিতে বালু ভরাট করেছেন আঃ রশিদরা।

শান্তিপূর্ণ ভোগদখলের জন্য সমর শীলরা খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের সুপারিশকৃত একটি আবেদন পত্র বাগেরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান গত ১৫-১২-২০২১ তারিখ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেনের বরাবর প্রেরণ করেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস গত হলেও তাঁরা কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে চরম হতাশা প্রকাশ করেন।

- বিজ্ঞাপন -

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং মেপে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও প্রতিপক্ষ সেটি মানছে না। প্রতিকার চেয়ে আবেদন করার পরে দীর্ঘ সময় পার হওয়ার সুযোগে প্রতিপক্ষ বাগেরহাটের বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারার একটি মামলা দায়ের করেছেন। একই মৌজার আলাদা মানচিত্রের দাগ খতিয়ানে বসবাস করলেও সুপরিকল্পিতভাবে শীল বংশের পরিবারদের হয়রানি করতে, প্রতিপক্ষ তাঁদের ভোগদখলীয় খতিয়ান ও দাগ উল্লেখ করে সমর শীলদের বিবাদী করে হয়রানিমূলক বাগেরহাট বিঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে।

অথচ প্রতিপক্ষ ১৪৪ ধারার মামলা করে আবার তাঁরাই নতুন করে শীল বংশের বারোয়ারী ওই পুকুরটিতে বালি ফেলছে ও কলা কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। সংখ্যালঘু ওই শীল বংশের মানুষেরা বর্তমানে মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং তাদের প্রতিনিয়তই হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে দাবী করেন তারা। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মিমাংশা করা হলেও প্রভাবশালী ওই আঃ রশিদদের খামখেয়ালীতে সমস্যার কোনো সমাধান মিলছে না।

এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের আঃ রশিদ ও লিয়াকত শেখের সাথে কথা হলে তাঁরা বলেন, আমরা ওই পুকুরের মধ্যে আমাদের জমি আছে তাই আমরা বালি ফেলেছি। তবে উপজেলা প্রসাশন একাধিকবার বৈধ কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বলা হলেও হাজির না হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তাঁরা।

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দীন দিপুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বিতর্কিত ওই বারান্দায় পুকুরের জমি নিয়ে বাগেরহাটের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ এর একটি মামলা চলমান রয়েছে। শীল পরিবারের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে। তাঁদের প্রতিপক্ষ রশিদ ও লিয়াকতকে পূর্বে দুইবার ডাকা হলেও তারা অফিসে উপস্থিত হননি। তারা বারবার সময়ক্ষেপণ করেছেন। আজকে (মঙ্গল বার) আবারও ডাকা হয়েছ।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
বাগেরহাট প্রতিনিধি
সাময়িকী, বাগেরহাট প্রতিনিধি।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!