উচ্চ আদালতের নির্দেশে খুলনা জেলা কারাগারে ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে ধর্ষক রফিকুল ইসলাম বাবুর বিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে ঘটনাটি প্রকাশ হয় সোমবার (১১ এপ্রিল)। ২০২০ সালে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা জেলা কারাগারের সুপার মো. ওমর ফারুক।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, আসামি রফিকুল ইসলাম খুলনা সদর থানাধীন রায়পাড়া এলাকার একটি বাড়িতে কেয়ারটেকার ছিলেন। ওই বাড়িতেই গৃহকর্মী ছিলেন ১৫ বছরের কিশোরী সুখমনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন রফিকুল। তাতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গৃহকর্তা মামলা করলে সেসময় গ্রেফতার হন রফিকুল।
জেলার তারিকুল জানান, খুলনা সদর থানায় ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর ধর্ষণের মামলা দায়েরের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন রফিকুল। আর ওই মেয়েটি ছিল সেফহোমে। সেখানেই তার সন্তান জন্ম নেয়।
তরিকুল আরও জানান, রফিকুল তার আইনজীবীর মাধ্যমে বিয়ের করার শর্তে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। সেখান থেকে আদেশ আসে বিয়ে দেওয়ার। আদেশে বলা হয়, বিয়ের পর রফিকুলের জামিনের আবেদন বিবেচনা করা হবে।
ওই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন জেল সুপার ওমর ফারুক, জেলার তারিকুল ইসলাম, ডেপুটি জেলার মো. ফখরউদ্দিন, ডেপুটি জেলার মো. নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টরসহ বিভিন্ন পদে নিয়োজিত কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বলেন, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না। যেহেতু এই বিয়েটা উচ্চ আদালতের নির্দেশে হয়েছে, তাই এটা নিয়ে অন্য কোনো কথা বলা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে মামলাটি করার পর বাদী আমার সহযোগিতা চেয়েছিলেন। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আমি তাকে সেফহোমে রাখার আবেদন করেছিলাম আদালতে। পরে আদালত তাকে বাগেরহাটের সেফহোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।