সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপালে দুই ইউনিটের ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজে বেশ কয়েকবার নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর সাম্প্রতিক সময়ে বেশ গতি পেয়েছে। প্রকল্পের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট এ বছরের সেপ্টেম্বরে চালু হওয়ার কথা রয়েছে
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, “মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট” ইউনিট-১ এ ৯০% এর বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রকল্পের সামগ্রিক অগ্রগতি প্রায় ৮০%।
বুধবার (৬ এপ্রিল) মৈত্রী প্ল্যান্টের সুইচইয়ার্ড এবং ইন্টারকানেক্টিং ট্রান্সফরমার সক্রিয় করায় প্রকল্পটি একটি বড় মাইলফলক ছুঁয়েছে।
এর মাধ্যমে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মৈত্রী প্ল্যান্ট সাবস্টেশনের ৪০০কেভি জিআইএস সুইচইয়ার্ড এবং ইন্টারকানেক্টিং ট্রান্সফরমারে বিদ্যুৎ প্রবাহ সক্রিয় হয়েছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ আকরাম উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি আগামী সেপ্টেম্বরে একটি ইউনিটের কার্যক্রম শুরু করতে পারব।” বেশ কয়েকবার সময়সীমা নির্ধারণ করলেও কাজ শেষ হয়নি । বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে বিআইএফপিসিএল ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ণের কাজ করছে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ১,৩২০ (২×৬৬০) মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ করতে বিআইএফপিসিএল ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ভারতীয় কোম্পানি ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (বিএইচইএল) এর সঙ্গে প্রকৌশল, ক্রয় এবং নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষর করে।
তবে, করোনাভাইরাস মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকবার বাড়িয়েও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি।
২০২০ সালের সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে ২০১৭ সালে ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে বিএইচইএল।
বর্ধিত সময়সীমা অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী সম্প্রতি বলেন, “রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এখন, বয়লার স্থাপনসহ রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমস্ত উপাদানের নির্মাণ কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।”
প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, ইউনিট-১ এর অধীনে টারবাইন জেনারেটর-১ এর টারবাইন বক্স-আপ এবং স্টেটর ও রটার স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
টারবাইন-১ এর ইরেকশন স্টেজের লুব অয়েল ফ্লাশিংও সম্পন্ন হয়েছে এবং টারবাইনের ইনসুলেশন কাজ এবং ফ্লাই-অ্যাশের ইনসুলেশন কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এদিকে, ইউনিট-২ এর বয়লার কাঠামো এবং চাপ অংশের নির্মাণ কাজও এগিয়ে চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বুধবার (৬ এপ্রিল) পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মৈত্রী প্ল্যান্ট সাবস্টেশনের ৪০০কেভি জিআইএস সুইচইয়ার্ড এবং ইন্টারকানেক্টিং ট্রান্সফরমারে বিদ্যুৎ প্রবাহ সক্রিয় হয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪০০ কেভি জিআইএস সুইচইয়ার্ড এবং ইন্টারকানেক্টিং ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশের ২৩০ কেভি গ্রিড সিস্টেমে ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এর ফলে বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন খুলনার দিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রেরণ করে গ্রীষ্মের সর্বোচ্চ চাহিদা মেটাতে সক্ষম।