পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট যেন ডারবান টেস্টের প্রতিচ্ছবি। তবে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ তো তবুও চার দিন লড়াই করে পাঁচ দিনে নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ দল। সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে সে আশা একেবারে ক্ষীণ। বড় হারের শঙ্কা নিয়ে আজ (রোববার) তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে মুমিনুল হকের দল।
হাতে ৬ সেশনের বেশি সময় নিয়ে ৪১৩ রানের পাহাড়সম টার্গেট টপকাতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে স্বাগতিক স্পিনারদের বিপক্ষে লড়ই করতে নেমে টালমাটাল অবস্থা বাংলাদেশ দলের। ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ২৭ রান। উইকেট থেকে যেভাবে টার্ন আর বাড়তি বাউন্স পাচ্ছেন প্রোটিয়া স্পিনাররা, তাতে এই টেস্ট বাঁচানো সফরকারী পক্ষে শুধু চ্যালেঞ্জই নয়, অসম্ভবই বটে। নতুন ব্যাটসম্যানকে সাথে নিয়ে মুমিনুল ৫ রানে সোমবার চতুর্থ দিনের শুরু করবেন।
ডারবান টেস্ট ২২০ রানে হেরে সিরিজে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ হার বাঁচাতে তাই পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট জয়ের বিকল্প নেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের সামনে। এ লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসে ডিন এলগারের দলকে ৪৫৩ রানে আটকে দিয়েও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। গুটিয়ে যায় মাত্র ২১৭ রানে। তবে ফলোঅন টপকাতে না পারলেও সফরকারীদের ফলোঅন করায়নি প্রোটিয়ারা। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার ব্যাট করতে নামে তারা।
আগের ইনিংসের ২৩৬ রানের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানে তুলে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। এতে সাকুল্য সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪১২ রান। ফলে বাংলাদেশ দলের সামনে ৪১৩ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দাঁড়ায়। এই টার্গেট টপকাতে নেমে ইনিংসের শুরুর ওভারেই ফেরেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। শূন্য রানে আউট হয়ে তিক্ত রেকর্ডের স্বাদ পান এই ডানহাতি তরুণ।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসে ‘গোল্ডেন ডাক’ মারেন জয়। বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজের বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে টার্ন করে বেরিয়ে যায়। অনায়াসেই ছেড়ে দেওয়ার মতো বলটিতে শরীর থেকে দূরে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন জয়। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। আগের আউটের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে আবার সজঘরের পথ ধরেন জয়।
মহারাজের করা পরের ওভারে ফেরেন শান্ত। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে করা শার্প টার্নে লেংথ পড়তে ভুল করে সামনে খেলতে গিয়ে আবার ব্যাক ফুটে যান শান্ত। মিস করেন লাইন। বল লাগে প্যাডে। আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। যদিও সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, তবে বল লাগছিল লেগ স্টাস্পের বাইরের অংশে। শান্তকে তাই ফিরতেই হয়, টিকে থাকে রিভিউ। ১০ বলে ৭ রানে আউট শান্ত।
দিনের শেষ বলে বাড়তি বাউন্সের শিকার হয়ে ফেরেন তামিম। সাইমন হারমারের বলটি অফ স্টাম্পের একটু বাইরের পেয়ে ডিফেন্স করার জন্য ব্যাট পেতে দেন তামিম। কিন্তু বলটি আচমকা বাড়তি লাফিয়ে একটু টার্ন করে ব্যাটে ছোবল দিয়ে সহজ ক্যাচ উঠে যায় স্লিপে। তামিম ফেরেন ১৩ রানে। এরপর শেষ হয় তৃতীয় দিনের খেলা।
৪১৩ রানের পাহাড়সম টার্গেট টপকাতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে ৩ উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা স্কোর বোর্ডে তুলেছে ২৭ রান। উইকেট থেকে যেভাবে টার্ন আর বাড়তি বাউন্স পাচ্ছেন প্রোটিয়া স্পিনাররা, তাতে এই টেস্ট বাঁচানো সফরকারী পক্ষে শুধু চ্যালেঞ্জই নয়, অসম্ভবই বটে। আগামীকাল নতুন ব্যাটসম্যানকে সাথে নিয়ে মুমিনুল ৫ রানে অপরাজিত থেকে আবার ব্যাটিংয়ে নামবেন।