বিদেশিদের কাছে আগামী দুই বছর বাড়ি বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডার সরকার। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের বাজেট পরিকল্পনার মধ্যে রাখা হবে। নিউইয়র্ক-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমাবার্গের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফুলে-ফেঁপে ওঠা কানাডার আবাসন ব্যবসাকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার।
গত দুই বছরে কানাডায় বাড়ির দাম ৫০% বেড়েছে। ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার বাড়ানোর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির বিভিন্ন শহরে রেকর্ডসংখ্যক বাড়ি বিক্রি হয়েছে।
আর বাড়ির দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে একটি কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে পাচার হওয়া কালো টাকা।
তবে কানাডায় পড়াশুনো করছেন এমন ছাত্র, কানাডিয়ান কোম্পানির বিদেশি কর্মী এবং দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী বিদেশিদের ওপর বাড়ি কেনার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
তবে ব্লুমবার্গ বলছে, কানাডিয়ান সরকারের এ নিষেধাজ্ঞার পরেও বাড়ির দাম কমবে বলে মনে হয় না।
রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম আরইসি’র কর্মকর্তা সিমিয়ন ফিলিপস বলছেন, “কানাডার হাউজিং খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা এখন চলছে। তাই, সরকারের এই পদক্ষেপের পর সেই প্রতিযোগিতায় হয়তো কিছুটা ভাটা পড়বে, কিন্তু বাড়ির দাম কমবে বলে আমি মনে করি না।”
কানাডা থেকে প্রকাশিত অর্থনীতি বিষয়ক সংবাদপত্র ফিনানশিয়াল পোস্টের এক নিবন্ধে ডায়ান ফ্রান্সিস লিখেছেন, কালো টাকা সাদা করার জন্য ক্যানাডা এক নম্বর দেশে পরিণত হয়েছে।
সে দেশে “স্নো ওয়াশিং” শব্দ চালু হয়েছে যা দিয়ে কালো টাকা বরফের মতো সাদা করা। আর এজন্য ব্যবহার করা হয় হাউজিং খাত।
এই কাজে জড়িত এক শ্রেণির রিয়েলটর, হাউজিং ডেভেলপার, মর্টগেজ ব্রোকার এবং ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইনানশিয়াল ইনটেগ্রেটি (জিএফআই) অটোয়া সরকারের সমালোচনাও করেছে।
কানাডার হাউজিং খাতের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে এক শ্রেণির বাংলাদেশির অবদান রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী প্রবাসীদের বাইরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি নগদ অর্থ দিয়ে বাড়ি কিনেছেন বলে এর আগে খবর এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এসব সম্পত্তির অনেকগুলোই কেনা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার দুর্নীতির অর্থ দিয়ে।